সারা বাংলা

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

প্রবাসীর দায়ের করা মামলায় টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শফিউল ইসলাম কাজী বাদলের (৫৫) নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। তবে হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন নিয়েছে শফিউল ইসলাম কাজী বাদল।

অপর দিকে, এই মামলার ১ নং আসামি সখিপুর উপজেলার কামালিয়া চালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আফরোজা আক্তার রিনি, বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে জানা যায়, মামলার বাদী মোহাম্মদ জামাল আহমেদ ২০১২ সালের ১০ এপ্রিল দক্ষিণ কোরিয়া যান। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে সহকারী শিক্ষিকা আফরোজা আক্তার রিনি সাথে পরিচয় হয়। ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি জামাল আহমেদ বাংলাদেশে এসে আফরোজা আক্তার রিনির ভাড়া করা সখীপুরের নুরু মিয়ার বাসায় উঠেন। ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর তারা খুলনায় দৌলতপুর দাম্পত্য জীবনযাপন করতে থাকে। পরবর্তীতে জামাল আহমেদ তার স্ত্রী আফরোজা আক্তার রিনিকে তার বাপের বাড়িতে রেখে আবারও দক্ষিণ কোরিয়া চলে যান। জামাল আহমেদ বাড়ি করার জন্য ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ২ মে পর্যন্ত আফরোজা আক্তারের মার্কেন্টাইল ব্যাংক সখীপুর শাখার ৭০ লাখ টাকা প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে ডেইরি ফার্ম করার জন্য আরও ১০ লাখ টাকা পাঠান। জামাল আহমেদ দেশে এসে ২০২২ সালের ৬ মে তার স্ত্রীকে আনতে গেলে আফরোজা আক্তার রিনি তার সাথে সংসার করবেন না বলে জানান।

এরপর জামাল আহমেদ কাজীর নিকট কাবিননামা নকল উঠান। কাবিননামায় ২০১৫ সালের পরিবর্তে ২০০৬ সাল দেখানো হয়েছে। কাবিননামার ভলিউম নং ১/২০০৬ ইং পৃষ্ঠা নং ৩৪ তারিখ ২০/১/২০০৬ ইং। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। কাবিননামায় আফরোজা আক্তার রিনিকে কুমারী বালেগা দেখানো হলেও বর্তমানে তার ১৫ বছরের একটি সন্তান রয়েছে।

পরে জামাল আহমেদ খুলনা দৌলতপুর মহানগর আদালতে মামলা (সিআর ১১৮/২২) করেন। মামলায় জাল জালিয়াতের মাধ্যমে সখীপুর পৌরসভার নিকাহ ও তালাক রেজিস্টার সখীপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিউল ইসলাম কাজী বাদলকে দ্বিতীয় আসামী করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে এর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

মোহাম্মদ জামাল আহমেদ বলেন, আফরোজা আক্তার জাল-জালিয়াতের মাধ্যমে কাজী বাদল ভুল তথ্য উপস্থাপন করে মিথ্যা কাবিননামা রেজিস্ট্রি করেন। বিভিন্ন ধাপে আমার নিকট থেকে আফরোজা আক্তার ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এ মামলায় কাজী বাদলের নামে সাজা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পরেও সখিপুর থানা পুলিশ গ্রেপ্তারের পরোয়ানা তামিল করতে কোনও ধরনের কার্যকলাপ গ্রহণ করছেন না। 

কাজী বাদল বলেন, বিষয়টি জানার পর তিনি আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। 

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে বর্তমানে তিনি ছয় সপ্তাহের জামিনে আছেন।