সারা বাংলা

বরগুনায় ১০ ছাত্রীকে মলমূত্র খাইয়ে নির্যাতনের অভিযোগ 

মোবাইলে মেয়ের ছবি তোলার অভিযোগে ১০ ছাত্রীকে মলমূত্র খাইয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে। 

বরগুনার আমতলী পৌর শহরের মাদানীনগর জামিয়া সাইয়েদা ফাতিমা বালিকা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাছে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীদের অভিভাবকরা।

ওই শিক্ষিক দম্পতির নাম আব্দুর রশিদ ও তাসলিমা বেগম। এই ঘটনায় তিন শিক্ষার্থী আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। আর বাকি সাত শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত শুক্রবার (২ জুন) রাতে শিক্ষক দম্পতির মেয়ে নুসরাত অভিযোগ করে ওই মাদ্রাসার ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসি মোবাইলে তার ছবি তুলেছে। 

মেয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই ১০ ছাত্রীকে নিয়ে বিচারে বসেন আব্দুর রশিদ ও তাসলিমা।

একপর্যায়ে আব্দুর রশিদ, তাসলিমা বেগম, তার ছেলে তাইয়েব ও মেয়ে নুসরাত মিলে ১০ ছাত্রীকে মারধর করেন। এরপর তারা মলমূত্র, ড্রেনের পচা পানি, হাঁসের মল বালতির পানিতে মিশিয়ে ১০ ছাত্রীকে একে একে জোর করে খাইয়ে দেন। এতে ওই ১০ ছাত্রীই অসুস্থ হয়ে পড়ে। শনিবার সকালে মাদ্রাসা থেকে তাদের ভর্তি বাতিল করে বাড়ি পাঠিয়ে দেন ওই শিক্ষিকা। 

ছাত্রীরা বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের এ ঘটনা জানায়। এদিকে, অনবরত বমি হওয়ায় মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছে জামিলা, জান্নাতুল ফেরদৌসী ও মারিয়া ইসলাম। এরপর স্বজনরা আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন তিন শিক্ষার্থীকে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা আমতলী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

বুধবার (৭ জুন) দুপুরে শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসির বাবা খালেক আকন রাইজিংবিডিকে বলেন, আমার মেয়ে কেন শিক্ষকের মেয়ের ছবি তুলবে। আমার মেয়ে কোনো অন্যায় করেনি। আর আমার মেয়ে কোনো অন্যায় করলেও সে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারতো। কিন্তু সে ১০ জন শিক্ষার্থীকেই অমানবিক নির্যাতন করেছে। আমরা প্রথমে বিষয়টি কেউকে জানাতে চাইনি। কিন্তু মেয়েরা এখন আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই বাধ্য হয়েই সবাইকে জানিয়েছি। 

মারিয়া ইসলামের বাবা সেলিম মোল্লা বলেন, যদি একজন ছবি তুলতো তার মেয়ের, তাহলে শুধু তার বিচার করতো। কিন্তু ১০ জনের ওপরে যে অত্যাচার করেছে এর বিচার চাই আমরা। এই শিক্ষিকা আগেও অনেক শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করেছে। তাই আমরা শিক্ষিকা তাসলিমাসহ চার জনের বিরুদ্ধে ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও সুপার মাওলানা আব্দুর রশিদ বলেন, মোবাইলে আমার মেয়ের ছবি তোলায় আমরা তাদের বিচার করেছি এবং ওই ছাত্রীদের মাদ্রাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি।

আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) রণজিৎ কুমার সরকার রাইজিংবিডিকে বলেন, এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আমাকে বিষয়টি তদন্তের জন্য বলেছেন।