সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় কৃষক আমিরুল ইসলাম (৫২) হত্যা মামলার প্রধান আসামি আব্দুল হাই ও তার ছেলে রাকিবুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জামিন শুনানি শেষে বিচারক মোছা. নাহিদ রহমান শরিফ তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আব্দুল হাই উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি।
এর আগে, আব্দুল হাই ও তার ছেলে আইনজীবীর মাধ্যমে উল্লাপাড়া আমলি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
উল্লাপাড়া আমলি আদালতের জেনারেল রেজিস্ট্রার অফিসার (জিআরও) জুয়েল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিচারক আসামিদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কৃষক আমিরুল ইসলামের সঙ্গে আসামিদের বিরোধ ও শত্রুতা চলে আসছিল। প্রধান আসামি আব্দুল হাই বিভিন্ন বিচার শালিস করে গ্রামের অসহায় মানুষের কাছ থেকে টাকা নিতেন। এসব কথা লোকজন বলতে গেলে তাদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হতো। একপর্যায়ে গ্রামের কিছু লোকজনের মধ্যে নলকূপের স্ক্রিম স্থাপন নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে শালিস বৈঠক হয়।
বৈঠকে স্ক্রিম মালিকদের কিছু টাকা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হাইয়ের কাছে জমা রাখা হয়। কিন্তু এ টাকা তিনি স্ক্রিম মালিকদের আর ফেরত দেননি। বিষয়টি নিয়ে কৃষক আমিরুল ইসলামসহ এলাকার কিছু মানুষ প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আমিরুল ইসলামকে খুন করার পরিকল্পনা করেন।
চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে আমিরুল ইসলাম গ্রামের একটি চায়ের দোকানের সামনে অবস্থান করছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হাইসহ আসামিরা তার ওপর হামলা চালায়। তাকে লোহার রড, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে নাঈম প্রামানিক বাদী হয়ে আব্দুল হাই ও তার ছেলে রাকিবুল ইসলামসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় বাবা-ছেলেকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।