সারা বাংলা

রাঙামাটিতে পর্যটন খাতের উন্নয়নে গতি নেই

দেশের বৃহত্তর জেলা রাঙামাটি। এ জেলার প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি দেখে মুগ্ধ হয়নি এমন মানুষ কমই আছে। এ জেলার রূপ, বৈচিত্র্য কাজে লাগিয়ে আশির দশকে সরকার এ জেলাকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে। তবে এত বছর পার হলেও এ অঞ্চলের পর্যটন শিল্পে গতি নেই। ব‌্যক্তি পর্যা‌য়ে কিছু পর্যটন স্পট গ‌ড়ে উঠলেও অর্থ সংকট কিংবা সরকারি পর্যা‌য়ের সহ‌যো‌গিতা না থাকায় এগু‌তে পার‌ছে না।

একদিকে পাহাড়, অন্যদিকে কাপ্তাই হ্রদ মিলেমিশে একাকার। এমন রূপ দেশের অন্য কোথাও নেই। এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা ছুটে আসে। তবে চাহিদামানের হোটেলে-মোটেলের অভাব রয়েছে। অটোরিকশা ব্যতিত বিকল্প যানের ব্যবস্থা নেই। এছাড়াও প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে রাঙামাটির সিম্বল খ্যাত ঝুলন্ত সেতুটি কাপ্তাই হ্রদের পানিতে তলিয়ে থাকে।

পর্যটন ব্যবসায় জড়িতরা বলছেন, পরিকল্পনা মাফিক পর্যটন স্পট গড়ে তোলা, পর্যটন খাতের উন্নয়নে নতুন নতুন বিনোয়োগকারী সৃষ্টি করা, পর্যটকদের সেবার মান বাড়ানো, খাবারের মান বৃদ্ধি করতে হবে।

পর্যটকরা বলছেন, যথানিয়মে হ্রদের পানি সীমাবদ্ধ রাখা, ঝুলন্ত সেতুটি নতুন করে প্রতিস্থাপন বা পানিতে ডুবে যেতে না পারে মতো উঁচু স্থানে প্রতিস্থাপন করতে হবে। তাহলে রাঙামাটির পর্যটনের প্রসার ঘটবে। ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা অমল সরকার বলেন, এখানে নিরাপত্তাজনিত সমস্যা নেই। কিন্তু এখানে পর্যটকদের বসার ভালো স্থান নেই। চারিদিকে অপরিষ্কার, ময়লা-আবর্জনা। এগুলো দ্রুত সমাধান করা জরুরি। 

পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা রবিন বলেন, ‘অনেক আশা নিয়ে ঝুলন্ত সেতু দেখতে এসেছি কিন্তু সেতুটি পানির নিচে। এতে আমাদের মন খারাপ হয়ে গেল।’ 

পর্যটন নৌঘাটের বোট চালক আলমগীর বলেন, ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যটন দিবস। কিন্তু বর্তমানে পর্যটনের ঝুলন্ত সেতুটি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় এখন আর পর্যটক সমাগম হচ্ছে না। অন্যান্য বছর এখানে শত শত পর্যটক ঘুরতে আসে।

রাঙামাটি পর্যটনের এলাকার বনানী হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মী তৃনা চাকমা বলেন, বেচাকেনা তেমন নেই। ঝুলন্ত সেতু পানিতে তুলিয়ে যাওয়ায় পর্যটকরা এখন আর আসছেন না। এতে ব্যবসায়িকভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ম্যানেজার আলোক বিকাশ চাকমা জানান, বিশ্বপর্যটন দিবস উপলক্ষে রাঙামাটিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রাঙামাটি জিমনেসিয়াম মাঠ প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে চার দিনব্যাপী পর্যটনমেলা।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও পর্যটন বিভাগের আহ্বায়ক নিউচিং মারমা বলেন,  সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে জেলার পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটাতে। পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে বাড়াচ্ছে  বাজেট। রাঙামাটি পর্যটনের উন্নয়নে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞরা বলছেন, সুষ্ঠু পরিকল্পনা পারে রাঙামাটি জেলার পর্যটনের প্রসার ঘটাতে। বিছিন্নভাবে গড়ে তোলা কোনো কিছুই ভালো নয়। নিদিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করে পর্যটন এলাকা ঘোষণা করতে হবে। তাহলে জেলার পর্যটনখাত এগিয়ে যাবে।