সারা বাংলা

কর্মচারীর ডাকে সৌদি থেকে গোপালগঞ্জে মালিক

ভাতিজার বিয়েতে অংশ নিতে সৌদি আরবের মালিকের (কফিল) ইচ্ছায় তাকে সঙ্গে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে গোপালগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে এসেছেন লালন শেখ (৪৫) নামের এক প্রবাসী।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জের পল্লী মঙ্গল ইউনাইটেড একাডেমি এন্ড কলেজে মাঠের অস্থায়ী হেলিপ্যডে অবতারণ করেন তারা। এসময় সৌদি আরবের নাগরিককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান গ্রামবাসী।

এর আগে আজ সকাল ৭টার দিকে সৌদি আরবের বিমানে করে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান লালন শেখ ও তার কফিল বন্দর এনাজি আশসাই। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কাজুলিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মোসলেম শেখের ছেলে লালন শেখ দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের রিয়াদের নাদিম শহরের বাসিন্দা বন্দর এনাজি আশসাই মালিকানাধীন একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। চাকরির সুবাদে মালিক বন্দর এনাজি আশসাইয়ের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রবাসী লালন শেখ তার ভাতিজার বিয়েতে মালিক বন্দর এনাজি আশসাইকে দাওয়াত দিলে তিনি বাংলাদেশে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেন। আজ বুধবার সকাল ৭টায় সৌদি আরবের বিমানে করে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন তারা। পরে দুপুর ১২টার দিকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জের পল্লী মঙ্গল ইউনাইটেড একাডেমি এন্ড কলেজে মাঠের অস্থায়ী হেলিপ্যডে অবতারণ করেন। এসময় স্থানীয়রা বন্দর এনাজি আশসাইকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। পরে সেখান থেকে নিজ বাড়িতে সৌদি মালিককে নিয়ে যান লালন শেখ।

এদিকে, প্রবাসী লালন শেখের সঙ্গে তার সৌদি মালিক (কফিল) গ্রামে আসার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে বেশ কয়েকদিন ধরে কাজুলিয়া গ্রামবাসীর মধ্যে চলছিল উৎসাহ উদ্দীপনা। সৌদি আরবের নাগরিককে বরণ করে নিতে নেওয়া হয় ব্যাপক প্রস্তুতি। বন্দর এনাজি আশসাই ও হেলিকপ্টার আসার খবর ছড়িয়ে পড়ে পুরো গ্রামে। আজ সকাল থেকেই স্কুল মাঠে ভিড় করে গ্রামবাসী। বাড়িতে আসার পর সৌদি নাগরিককে দেখতে লালন শেখের বাড়িতে ভিড় করেন আরও মানুষজন। পরে গ্রামবাসীর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন বন্দর এনাজি আশসাই।

কাজুলিয়া গ্রামের রফিক শেখ বলেন, এর আগে কখনো কেউ আমাদের গ্রামে হেলিকপ্টারে করে আসেননি। আমাদের গ্রামের ছেলে লালন শেখের সঙ্গে এসেছেন তার মালিকও। আমরা খুবই খুশি হয়েছি হেলিকপ্টার দেখে।

আবুল জানলাম শেখ বলেন, এবরাই প্রথম কাছ থেকে হেলিকপ্টার দেখলাম। দেখে ভালো লেগেছে। হেলিকপ্টারে করে সৌদি আরবের নাগরিক এসেছেন তাকেও দেখেছি। এমনকি লালন শেখের বাড়িতে গিয়ে তার সঙ্গে খাবার খেয়েছি। তিনি এতো বড়মাপের মানুষ হলেও তার মধ্যে কোনো অহংকার নেই।

লালন শেখ বলেন, আমার কফিল (মালিক) বন্দর এনাজি আশসাইকে আমার ভাতিজার বিয়ের দাওয়াত দিলে তিনি আসার আগওহ প্রকাশ করেন। আমার ভাতিজাও আমার কফিলের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি আমাদের বাড়িতে দুই সপ্তাহ থাকবেন। পরে আমি আর আমার কফিল একসঙ্গে সৌদি আরব ফিরে যাবো।

নিজ কর্মীর বাড়ি বাংলাদেশে এসে কেমন লাগছে জানতে চাইলে বন্দর এনাজি আশসাই বলেন, বাংলাদেশ আমার দ্বিতীয় বাড়ি। এখানকার মানুষ খুবই ভালো। এখানে আসতে পেরে খুবই ভালো লেগেছে। এখনকার মানুষের ভালবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি প্রায় দুই সপ্তাহ এখানে থাকবো। এখানকার প্রতিটি এলাকা আমি ঘুরে দেখবো। এছাড়া আমার এক কর্মীর বিয়ের দাওয়াতে অংশ নেব। এখান থেকে ফিরে আমার প্রতিষ্ঠানে এই এলাকার আরো কর্মী নেব আমি।

তিনি আরো বলেন, মানুষের আথিতেয়তায় আমি মুগ্ধ। আগামীতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করারও আশা প্রকাশ করেন তিনি।