সারা বাংলা

বগুড়ায় নিখোঁজ যুবকের লাশ মিললো ডোবায়

বগুড়ায় শাজাহানপুরের একটি ডোবা থেকে আব্দুল্লাহ ওরফে সাগর নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। নিখোঁজ হওয়ার ১৩দিন পর তার লাশ উদ্ধার হলো।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ‍উপজেলার গোহাইল ইউনিয়নের জামাদারপুকুর খাদাশ পশ্চিমপাড়া গ্রাম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে গতকাল ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লাশটি উদ্ধার হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- একই গ্রামের মৃত ছলিম উদ্দিনের ছেলে আবু মুছা (৩৮), আজিজার রহমানের ছেলে কালাম (২৬) ও মৃত হায়দার আলীর ছেলে বাবলু হোসেন (২৫)।

নিহত সাগর একই গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে।

 

নিহত সাগরের স্বজনরা জানান, সাগর মাদকসেবী ছিলেন। কিন্তু কারো সঙ্গে তার ঝগড়া বিবাদ ছিল না। সাগর যাদের সঙ্গে চলাচল করতেন মাদক সংক্রান্ত বিষয়ে তারাই তাকে হত্যা করেছে। 

তারা আরও জানান, গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে সাগরকে কেউ একজন ফোন দিয়ে কোথাও যেতে বলে। সাগর যেতে না চাইলে তাকে ৫ মিনিটের জন্য যেতে বলে। ওইদির রাতে সাগর বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই তিিনি নিখোঁজ ছিলেন। 

নিহতের চাচি তানিয়া খাতুন অভিযোগ করে বলেন, সম্ভাব্য বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে সাগরকে না পেয়ে তারা থানায় জিডি করতে যান। কিন্তু থানার একজন কর্মকর্তা তাদের জিডি না নিয়ে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। উল্টো তাদেরকে থানায় আটকে রাখতে বলেন এবং তানিয়া খাতুনের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের ছেলে নিখোঁজ অথচ আমরাই নাকি অন্যকে ফাঁসাতে জিডি করতে এসেছি। এমন অভিযোগ আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে আমাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়। পরে আমরা সেখান থেকে চলে আসি। এরপর গত ২৩ তারিখে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে নিয়ে জিডি করা হয়। নিহতের মা ঝর্না বেওয়া জিডি করেন।  

লাশ উদ্ধারের পর সাংবাদিকদের বগুড়া পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবির জানান, ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে গ্রেপ্তার মুসা নিহত সাগরকে মোবাইলে কল দিয়ে বাড়ির পাশের বাঁশবাগানে ডেকে নিয়ে যান। এরপর গলায় গামছা পেঁচিয়ে সাগরকে অচেতন করার চেষ্টা করেন মুসা ও গ্রেপ্তার অন্য দুই আসামি। সাগর জ্ঞান হারালে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা। পরে সাগরের লাশ পাশের ডোবায় কচুরিপানার মধ্যে চাপা দেয় আসামিরা।

নিখোঁজের আগে সাগরের মোবাইলে আসা শেষ ফোনকলের সূত্র ধরে পিবিআই হত্যাকারীদের শনাক্ত করে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, থানায় জিডি হওয়ার পর থেকেই পিবিআই ছায়া তদন্তে নামে। তথ্য প্রযুক্তির সাহায্য ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মুসাকে শনাক্ত করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার হেমায়েতপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর মুসা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এ সময় তিনি বাকি দুই আসামির নাম বলে দেন। গতকাল রাতেই অভিযান চালিয়ে নিজ নিজ বাড়ি থেকে কালাম ও বাবলুকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে জিডি না নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, সাগরের নিখোঁজের খবর পেয়ে পুলিশ তাদের ডেকে এনে জিডি নিয়েছিল। কেউই তাদের (স্বজন) সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেনি। অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন।