তিস্তা ব্রিজ থেকে নদীতে ছুড়ে ফেলে নবজাতক সন্তানকে হত্যার দায়ে ঘাতক বাবা লাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানিয়েছে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ। গত ২৭ অক্টোবর বিকেলে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ জানায়, জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝার ইউনিয়নের রাবাইটারী এলাকায় লালমিয়া ও ছামিরন তিন বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেন। পরিবার বিয়ে মেনে না নেওয়ায় স্ত্রীকে নিয়ে নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ তেঁতুলতলা এলাকার একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন লাল মিয়া। গত ২২ অক্টোবর ছামিরন তার বাবার বাড়িতে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। এরপর থেকেই লাল মিয়া সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করছিলেন। এনিয়ে ছামিরন প্রতিবাদ করলে গত ২৭ অক্টোবর বিকেলের দিকে লাল মিয়া নবজাতকের ডিএনএ পরীক্ষার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিস্তা ব্রিজের মাঝখানে পৌঁছালে লাল মিয়া মোটরসাইকেল থামিয়ে নবজাতককে মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ব্রিজের ওপর থেকে তিস্তা নদীতে ফেলে দেন এবং মোটরসাইকেল নিয়ে রংপুরের দিকে পালিয়ে যান।
ছামিরনের কাছ থেকে ঘটনাটি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত পথচারীরা কাউনিয়া ফায়ায় সার্ভিসকে খবর দেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নবজাতকে খোঁজাখুজি করেও কোনো সন্ধান পাননি। পরে ছামিরন বাড়ি ফেরার পথে তার স্বামীকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ছমিরন মোবাইলে কৌশল অবলম্বন করে লাল মিয়াকে তার কাছে আসতে বলেন। গত ২৮ অক্টোবর রাতে লাল মিয়া ছামিরনের কাছে যান। ছামিরন কৌশলে কচাকাটার বলদিয়া ইউনিয়নের শাহিবাজার গ্রামে তার ভাইয়ের শ্বশুর মো. আব্দুল কুদ্দুসের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করেন। খবর পেয়ে কচাকাটা থানা পুলিশ লাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লাল মিয়া সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. রুহুল আমীন জানান, বাবা কর্তৃক নিজ নবজাতক ছেলেকে হত্যা একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা। এই বিষয়ে নাগেশ্বরী থানায় গত ২৯ অক্টোবর হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘাতক বাবা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।