সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে ধারণ ক্ষমতার চেয়েও পাঁচগুণ বেশি বন্দি রয়েছে। এতে বন্দিদের খাবারের সমস্যা না হলেও থাকার সমস্যা হচ্ছে। তবে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্দিদের থাকতে খুব বেশি সমস্যা হচ্ছে না।
জেলা কারাগার সূত্রে জানা যায়, ১৯১৮ সালে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর তীরে উপ-কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৪ সালে সিরাজগঞ্জ জেলা ঘোষণা হওয়ার পর ১৯৯৪ সালে উপ-কারাগারটি জেলা কারাগারে রূপান্তরিত হয়।
ওই বছরেই শহরের কান্দাপাড়া এলাকায় ৬.৫০ একর জমির ওপর এই কারাগারের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে এখানে বন্দিদের জন্য ৭টি ভবন রয়েছে। জেলা কারাগারে ৩৫২ জনের ধারণ ক্ষমতা থাকলেও বন্দি আছেন ১৭৫৬ জন। যা ধারণ ক্ষমতার প্রায় পাঁচগুণ (৪.৯৮৮) বেশি।
কয়েকজন কারা সদস্য জানান, বন্দিদের জন্য নির্ধারিত ওয়ার্ডগুলোতে বর্তমানে ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি বন্দি আছে। দিনের বেলায় বন্দিরা ওয়ার্ডের বাইরে ঘোরাফেরা করলেও বিকেল থেকে ওয়ার্ডে প্রবেশ করতে হয়। অধিক বন্দি থাকায় ওয়ার্ডে শোবার পরিবেশ নেই। শীত মৌসুমে তেমন সমস্যা না হলেও গরমে এই সংকট তীব্র হয়ে ওঠে।
সিরাজগঞ্জ কারাগারের জেলার মোহাম্মদ ইউনুস জামান বলেন, বর্তমানে এই কারাগারের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি বন্দি আছে। তারা সবাই ওয়ারেন্টের প্রেক্ষিতে বা কোনো না কোনো মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে এসেছেন। আমাদের কাজ হলো যারা এখানে আসবেন তাদের দেখাশোনা করা, ভালো রাখা ও ভালোর পথে আনার চেষ্টা করা।
তিনি আরও বলেন, বন্দির সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি হলেও সমস্যা হচ্ছে না। আমাদের যথেষ্ট জনবল রয়েছে। আরও কয়েকশ বন্দি আসলেও সমস্যা হবে না। এছাড়া, যেহেতু বন্দি হিসেব করে নিয়মানুযায়ী খাবার দেওয়া হয়, তাই বন্দিদের খাবারের কোনো সমস্যা নেই।
কারাগারের সুপার এ.এস.এম কামরুল হুদা বলেন, কারাগারের ধারণ ক্ষমতা ৩৫২ জনের হলেও সেই সময়ে যে ভবনগুলো করা হয়েছিল, সেখানে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি বন্দি থাকতে পারেন। এখানে দেড় হাজারের মতো বন্দি প্রায়ই থাকে। ফলে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। তবে, বন্দি দুই হাজারের উপরে গেলে একটু সমস্যা হবে।
তিনি আরও বলেন, বন্দি যেহেতু বেশি তাই স্বাভাবিকভাবেই বন্দিরা অতোটা আরামে থাকতে পারেন না। তবে খাবারের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয় না। কারণ ব্রিটিশদের সময় থেকেই বন্দিদের ডায়েটের (খাবারের) নিয়ম হলো, বন্দি যতজন ততজনই খাবার পাবেন।