সারা বাংলা

‘পোশাক কারখানায় হামলা-ভাঙচুরে কুচক্রীমহল জড়িত’

গাজীপুরে পোশাক কারখানায় হামলা-ভাঙচুরে কুচক্রীমহল জড়িত বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোশতাক আহমেদ। তিনি বলেন, এখানে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় কারখানায় ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) ২৭ জনকে র‌্যাব আটক করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। কোনাবাড়ি এলাকায় বিকেলে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সেখানে দায়িত্ব পালন করা র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।

বেতন বাড়ানের দাবিতে গাজীপুরে গত ১৮ দিন ধরে বিভিন্ন শিল্প কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে। এরমধ্যে সরকার থেকে ন্যূনতম সাড়ে ১২ হাজার টাকা বেতন ঘোষণা করলেও তা তারা প্রত্যাখ্যান করে। কমপক্ষে ২৩ হাজার টাকা বেতনের দাবিতে বেশ কিছু কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। তবে এই আন্দোলনে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। 

আরও পড়ুন: গাজীপুরে আবারও পোশাক শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বিকালে গাজীপুরের কোনাবাড়িতে গ্রেপ্তার ও মারধরের গুজবে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পোশাক শ্রমিকরা। বিকেল ৩টার দিকে হঠাৎ তুষুকা কারখানার ভেতর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। পরে পুলিশ. র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যদের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এরপর কিছু শ্রমিক ভেতরে অবস্থান করে কারখানার মধ্যে ভাঙচুর করে। বাকি শ্রমিকরা বাইরে অবস্থান নিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপরও ভেতরে থাকা শ্রমিকরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ভাঙচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে কারখানার মূলফটক আটকে দেয়। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মোশতাক আহমেদ বলেন, ‘আপনারা জানেন, ইতোমধ্যে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। এরই মধ্যে কিছু কুচক্রীমহল শ্রমিকদের সঙ্গে মিশে পরিস্থিতি খারাপ করার চেষ্টা করছে। এ জন্য ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পরিবেশ শান্ত রাখতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে র‌্যাবও কাজ করছে। কিছু অসাধু বা কুচক্রীমহল কারখানা ভাঙচুর ও পরিবেশ অশান্ত করার চেষ্টা করছে। তৈরি পোশাক আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখানে যাতে কেউ অশান্ত করতে না পারে তার জন্য শ্রমিকদের কাজে ফেরানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’

শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপি ও বিরোধীদলের সংশ্লিষ্টতা আছে কি-না— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এই এলাকায় লাখ লাখ শ্রমিক কাজ করে। যেহেতু বেতন ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার ৫০০ করা হয়েছে, তাই আমরা বিশ্বাস করি, শ্রমিকরা শান্ত থাকবে। আমরা এটাও বিশ্বাস করি, শান্তিপ্রিয় শ্রমিকরা রাস্তাঘাট অবরোধ, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করতে পারে না।’ 

তিনি বলেন, কোনাবাড়ি এলাকা থেকে ২৭ জনকে আটক করা হয়েছে। এখানে ইটপাটকেলের আঘাতে অনেকে আহত হয়েছে। আটকদের যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।