সারা বাংলা

মানবপাচার: মাদারীপুরে আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ

মাদারীপুর সদর উপজেলার পখিরা গ্রামের তানভীর মল্লিক নামে এক যুবককে পাচারের অভিযোগে টুলু খান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব -৮)। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে মাদারীপুর সদর থানায় হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। ত‌বে অন্য এক আসামিকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পখিরা গ্রামের রফিক মল্লিকের ছেলে তানভীর মল্লিককে ইতালি পাঠানোর জন্য শরীয়পুরের তুলাতলা গ্রামের টুলু খানের সাথে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী কয়েক দফায় টুলু খানকে ১২ লাখ টাকা দেয় তানভীরের পরিবার। চলতি বছরের ১৯ জুলাই তানভীরকে লিবিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে দেয়। পরে তানভীরকে মুক্ত করার জন্য আরও ৭ লাখ টাকা আদায় করে। যা ইসলামী ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্ট নম্বরে দেওয়া হয়। এরপরও তানভীরকে মুক্ত না করে দফায় দফায় নির্যাতন চালায় মাফিয়ারা। নির্যাতের ভিডিও দেখিয়ে আরও টাকা দাবি করে। এ সময় বাধ্য হয়ে আরও ৫ লাখ টাকা আদায় করে মানবপাচারকারী চক্র।

এই ঘটনায় গত ১৩ নভেম্বর তানভীরের ভাই মো. সাগর বাদী হয়ে ৪ জনের বিরুদ্ধে মাদারীপুর মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইবুনালে একটি মামলা করে।

ট্রাইবুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করতে মাদারীপুর সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। এরপর পুলিশ আসামি গ্রেপ্তার না করায় র‌্যাব-৮ মাদারীপুরের একটি দল মামলার প্রধান আসামি টুলু খানকে গ্রেপ্তার  করে সদর থানায় হস্তান্তর করে। টুলুকে গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে  মাদারীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আরও অনেকেই থানায় আসেন।  এ সময় জাকির হোসেন মৃধা ভুক্তভোগী টুলু ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্যাতন ও মানবপাচারের অভিযোগে সদর থানায় একটি অভিযোগ দেন এবং টুলুর স্ত্রী হাসিনা বেগমকে স্থানীয়রা আটক করে সদর থানায় হস্তান্তর করে। তবে অভিযোগটি সদর থানার ওসি মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি হননি।  পরবর্তীতে হাসিনা বেগমকেও ছেড়ে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগীদের দাবি, আর্থিক সুবিধা পেয়ে মামলা গ্রহণ করেননি ওসি এবং অভিযুক্ত হাসিনা বেগমকে ছেড়ে দিয়েছে।  এ বিষয়ে লিবিয়া বন্দি রনি মৃধার ভাই জাকির হোসেন মৃধা বলেন, আমি থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলাম। শুনেছি সেটা মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি। আমি বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী জানান, দালালের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা পেয়ে আমাদের মামলা গ্রহণ করেনি।  আসামি ছেড়ে দিয়েছে।

এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানার ওসি এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা গ্রহণ না করা এবং আসামি ছেড়ে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। তিনি এসব মামলা আদালতে করার পরামর্শ দেন। 

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলমকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বার্তা পাঠালেও জবাব দেননি।