সারা বাংলা

‘যারা নির্বাচন বন্ধে অগ্নিসন্ত্রাস করছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিন’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শামীম ওসমান বলেছেন, ‌‘আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি, শুধু নির্বাচনী প্রার্থীদের নয়, যারা নির্বাচন বন্ধ করার জন্য সারাদেশে অগ্নিসন্ত্রাস করছে তাদের বিরুদ্ধেও যেন তারা (নির্বাচন কমিশন) কঠোর ব্যবস্থা নেয়। যাতে জনগণ নিজ ইচ্ছায় ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।’

নারায়ণগঞ্জ ২য় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ও অনুসন্ধান কমিটির কর্মকর্তা কাজী ইয়াসিন হাবীবের কাছে রোববার (৩ ডিসেম্বর) স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখা দেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন। নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে শামীম ওসমানকে শোকজ করেছিলো নির্বাচন কমিশন। 

শামীম ওসমান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আমাকে একটি নোটিশ দিয়েছিল। বিএনপি-জামায়াত সারা দেশে যে অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্য চালাচ্ছে তার প্রতিবাদে আমার আসনের বিভিন্ন এলাকায় শান্তি মিছিল করা হয়েছে। শান্তির প্রতিক নৌকা। যখন নির্বাচন থাকে না, তখনও কিন্তু মিছিলের মধ্যে নৌকা শব্দটি আসে। সেখানে কোথাও কোথাও নৌকার স্লোগান দেওয়া হয়েছে। আমি নির্বাচনের আইন মানার চেষ্টা করেছি। তাই মনোনয়নপত্র দেওয়ার সময় আমি একা এসেছি, আমার সঙ্গে আমার ছেলে এসেছিল। নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছেন যে, জাতির পিতার কন্যার অধীনে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। অনেকে দেশে-বিদেশে এই নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। আমি কখনো দেখিনি যে, একটা পত্রিকার রিপোর্টের কারণে প্রার্থীকে তলব করা হয়, তাও যেখানে প্রার্থী উপস্থিত নেই। সেই হিসেবে আমার এখানে দুঃখ পাওয়ার কথা, তবে আমি দুঃখ না পেয়ে আনন্দিত হয়েছি। নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছেন যে, তারা বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারবেন।’

নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘের এক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শামীম ওসমান বলেন, ‘নির্বাচনে দেখতে হবে যে, জনগণ অংশ নিচ্ছে কিনা। আমি এই মুহূর্তে আমার মনোনয়নপত্র ছেড়ে দেবো যদি জাতিসংঘ ৩টি কাজ করতে পারে। প্রথমত, ইসরায়েলি ইহুদিরা যে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে সেটা যদি বন্ধ করতে পারেন এবং ফিলিস্তিনিদের যদি তাদের ভূমি ফিরিয়ে দিতে পারেন তাহলে আমি মনে করবো জাতিসংঘের এ ধরণের কথা বলার অধিকার আছে। দ্বিতীয়ত, ১২ লাখের ওপরে রোহিঙ্গা আজ ১০ বছর ধরে বাংলাদেশে আছে। বাংলাদেশকে কোন মানবতা কিনবা আইন শেখানোর আগে জাতিসংঘকে অনুরোধ করবো, প্রথমে এই পদক্ষেপ নেন, যাতে ১২ লাখ লোক নিজের ভূমিতে ফিরে যেতে পারেন। আমার শেষ প্রশ্ন থাকবে ওনারা রাজনৈতিক দলের ব্যাখ্যা কাকে বলবেন। যারা ২০১৪-১৫-তে মানুষ পুড়িয়ে মারলেন, বাস জ্বালালেন, গাড়ি পোড়ালেন। তাদের কে রাজনৈতিক দল বলবেন, নাকি সন্ত্রাসী দল বলবেন। এই কাজগুলো যদি জাতিসংঘ করতে পারে তাহলে তারা আমাদের উপদেশ দেবেন, সেই উপদেশ আমরা মেনে নেবো। নাহলে তাদের বলবো, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আছে, দাঁড়িয়ে থাকবে এবং পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশের তরুণরা প্রমান করবে, বাংলাদেশে পৃথিবীর কারো কাছে মাথানত করার জন্য সৃষ্টি হয়নি।’

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মহসিন মিয়া প্রমুখ।