সারা বাংলা

পাবনায় সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় মামলা

নকল দুধ তৈরির সংবাদ প্রকাশের জেরে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় মানিক হোসেন (৩৩) নামের এক সাংবাদিককে পিটিয়ে পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত ওই ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। 

বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে আহত সাংবাদিকের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় মামলাটি করেন। মামলা নম্বর ৫।

আরও পড়ুন: পাবনায় সাংবাদিকের পা ভেঙে দিল সন্ত্রাসীরা

আসামিরা হলেন- উপজেলার চক লক্ষীকোল গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে রাজিব হোসেন (২৭), পুঁইবিল গ্রামের মহসিন আলীর ছেলে বায়োজিদ হোসেন (২৫), মৃত হামিদ প্রামাণিকের ছেলে মাহাতাব আলী (২৭), কৈডাঙ্গা নতুনপাড়া গ্রামের আবু তালেবের ছেলে আবুল বাশার (৪০) ও মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে বাবু হোসেন (৩০)।

ওসি নাজমুল হক বলেন, মামলা হয়েছে। কিন্তু এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি আসামিদের আইনের আওতায় আনা যাবে।

অভিযোগে জানা যায়, ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চক লক্ষীকোল গ্রামের দুগ্ধ ব্যবসায়ী রাজীব আহমেদ এবং কৈডাঙ্গা গ্রামের আবুল বাশার দীর্ঘদিন ধরে নকল দুধ তৈরির করে বাজারজাত করে আসছেন। এনিয়ে কিছুদিন আগে মানিক হোসেনসহ কয়েকজন সাংবাদিক নকল দুধ তৈরির ভিডিও ধারণ করেন। এসব ভিডিও উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনকে দেখালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মতবিনিময় সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সুশীল সমাজের বক্তারা এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন।

পরে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজিব আহমেদ ও আবুল বাশারের নেতৃত্বে বায়েজিদ, রাজিব ও মাহাতাবসহ ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত গতকাল মঙ্গলবার সকালে পুঁইবিল সড়কে মানিককে একা পেয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মানিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় মানিককে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

আহত সাংবাদিক মানিক বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই নকল দুধ তৈরির ব্যবসায়ীরা বাড়িতে এসে হুমকি দিচ্ছিলেন। তারা আমাকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে এবং পেটানোর ভিডিও ধারণ করেছে। আমার মোটরসাইকেল ও মোবাইল কেড়ে নিয়েছে। আমি আমার পরিবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ইকরামুন নাহার শেলী বলেন, এক্স-রেতে মানিকের পায়ের হাড় ডিসপ্লেস হয়েছে বলে দেখা গেছে। তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, সাংবাদিককে মারধরের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন পাবনায় কর্মরত সাংবাদিকরা। পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে বাঁধা, হুমকি, হামলা যেন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাংবাদিক মেরে কিছু হয় না বিষয়টি এমন হয়ে গেছে। শাস্তি না হওয়ায় অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। মানিকের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই। না হলে কঠোর কর্মসূচী দেওয়া হবে।