সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাত থেকে উদ্ধার হয়ে বাড়ি ফিরে আসলেন নেত্রকোনার নাবিক রুকন উদ্দীন। বৃহস্পতিবার রাতে জেলার সদর উপজেলার ঠাঁকুরাকোনা ইউনিয়নের বাঘরোয়া গ্রামের বাড়িতে পৌঁছেন তিনি। এ সময় নাবিক রুকনকে একনজর দেখতে বাড়িতে ভিড় জমান বন্ধুবান্ধব, স্বজন ও এলাকাবাসী। ঘরের ছেলে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার রুকন উদ্দিন বাড়ি ফিরে আসায় যেন তাদের মাঝে ঈদআনন্দ বইছে।
গত ১৪ মে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায় দস্যুকবলে পতিত হয় জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। পরবর্তীতে কোম্পানির সব নিয়মনীতি মেনে বৃহস্পতিবার সকালে ট্রেনে বাড়ির উদ্দেশে রওনা করেন রুকন।
মেরিন ইঞ্জিনিয়ার রুকন বাঘরোয়া গ্রামের কৃষক মিরাজ আলী ও লুৎফুর নাহারের পাঁচ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ। রুকনের মা-বাবা, ভাই-ভাবি, ভাতিজা সবাই আনন্দে আত্মহারা। প্রত্যেকেই অধীর আগ্রহে সন্ধ্যার আগ থেকে পথ চেয়ে বসে ছিলেন, কখন ঘরের ছেলে ঘরে ফিরবে। রাতে বাড়িতে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে অনেকের চোখ দিয়ে আনন্দাশ্রু ঝরতে থাকে। সে সময় সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন মুহূর্ত।
দীর্ঘদিন পর মা লুৎফুর নাহার ছেলেকে পেয়ে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি শুরু করেন। অন্যদিকে, বাবা মিরাজ আলী ছেলের চেহারার দিকে নির্বাক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকেন।
ছেলের দেখা পেয়ে রুকনের মা লুৎফুর নাহার বলেন, আজকে আমার আনন্দের শেষ নেই। আমি আল্লাহর কাছে কত দোয়া পড়েছি আমার মানিক চাঁনকে ফিরে পেতে। আল্লাহ আমার কথা শুনেছে। আমার ছেলে আমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
রুকনের বাবা বলেন, ঈদের দিন আমার বাড়িতে কোনও আনন্দ ছিল না, কোনও নাওয়া-খাওয়া ছিল না। আজকে আমার বাড়িতে ঈদের আনন্দ ফিরে এসেছে। আমরা সবাই আজকে যেন ঈদের আনন্দ করছি।
উল্লেখ্য, ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ’র ২৩ নাবিকের একজন ছিল নেত্রকোনার রুকন উদ্দিন।