কারফিউ শিথিল থাকায় রংপুর মহানগর এলাকায় লোকজনের চলাচল ও যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরও স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। এছাড়াও আন্তঃজেলা দূরপাল্লার বাস চলাচলে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে রংপুরের জনজীবন।
শনিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে রংপুর নগরীর জাহাজ কোম্পানি, শাপলা চত্বর, পার্ক মোড় ও মর্ডান মোড় ঘুরে দেখা গেছে, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের তাণ্ডবের ধাক্কা কাটিয়ে সেনা সদস্যদের প্রতি আস্থা রেখে খুলেছে সব ধরণের দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও কারফিউ শিথিলতায় গত তিনদিন ধরে সড়ক মহাসড়কে চলাচল শুরু করেছে দূরপাল্লা বাসসহ ছোট-বড় সকল যান। এতে আতঙ্ক কেটে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে পথচারী, ব্যবসায়ী ও নগরবাসী।
রংপুর মর্ডান মোড়ের মুদি ব্যবসায়ী হাসমত জানান, ছাত্র আন্দোলনের তাণ্ডবের পর গত এক সপ্তাহ ধরে দোকানপাট বন্ধ থেকে প্রায় অচল ছিলো রংপুর। সেনাবাহিনী নামার পর সেই অবস্থা একেবারে কেটে গেছে। গত তিন দিন ধরে দিনের বেলায় আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক নিয়মে করছি। শহরে এখন কোনো ঝামেলা ঝামেলা নেই।
এ সময় ঢাকাগামী আলাউদ্দিন নামের এক দূরপাল্লার যাত্রীর সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে ছোটখাটো একটি ব্যবসা করি আমি। কিন্তু ছাত্র আন্দোলনের পর গাড়ি বন্ধ থাকায় ফিরতে পারিনি। যদিও এটি স্বাভাবিক হয়েছে ৩-৪ দিন আগে। কিন্তু ঢাকা যাওয়ার সাহস পাচ্ছিলাম না। এখন সাহস করে বের হয়েছি ঢাকা যাওয়ার জন্য। বাহিরের পরিবেশ একেবারে শান্ত, স্বাভাবিক। এখন আর কোনো আতঙ্ক নেই।
রংপুর বিভাগের আট জেলায় কারফিউ জারির অষ্টম দিনে শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শিথিল থাকবে। এদিন সকাল ৬টার আগ পর্যন্ত এবং রাত ৯টার পর থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত কারফিউ বলবত থাকবে বলে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসন। তবে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকলেও বিভাগীয় নগরী রংপুরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে পুলিশ ও সেনা সদস্যদের টহল ছিলো চোখে পড়ার মতো।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, রংপুর মহানগরসহ জেলায় সার্বিক পরিস্থিতি সন্তোষজনক। কারফিউ শুরুর পর থেকে রংপুরে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী ছাড়াও বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যরা কাজ করছেন। দ্রুতই সব কিছু স্বাভাবিক হবে।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন জানান, রংপুর মহানগরীসহ আট জেলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই কারফিউ স্থায়ীভাবে তুলে নেওয়া হবে। জনগণ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিবেচনায় শিথিল সময় ছাড়া অন্য সময়ে সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে।