প্রায় ৯ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও আড়াই কোটি টাকার সম্পদের তথ্য গোপন মামলায় বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করেছেন আদালত। গত মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেলে দুদুকের দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ শেষে বগুড়ার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ নির্দেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর আইনজীবী (পিপি) এস এম আবুল কালাম আজাদ।
আসামি মঞ্জুরুল আলম মোহন বগুড়া শহরের বাদুড়তলা এলাকার মৃত দারোগা শাহ আলমের ছেলে।
এর আগে ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি দুদক বগুড়া কার্যালয়ের সাবেক সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম মোহনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় নিজ কার্যালয়ে মামলা করেন।
দুদক সূ্ত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল আলম মোহন ও তার উপর নির্ভরশীলদের নামে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত বিপুল পরিমাণ সম্পদের অভিযোগ উঠলে ২০১৯ সালের ২৬ জুন দুদক প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে তিনি ওই বছরের ১৮ আগস্ট বগুড়া কার্যালয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। সম্পদ বিবরণীতে মোহন জানান, তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ১৫ কোটি ৫৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। পরে দুদক থেকে তদন্ত করে ১৮ কোটি ৭৬ লাখ ৫০ হাজার ৯৯৩ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য পায়। এই সম্পদ অর্জনের বিপরীতে মঞ্জুরুল আলম মোহনের মোট গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায়, ৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯১৬ টাকা।
পরে দুদক বগুড়া কার্যালয়ের সাবেক সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম গত ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি মোহনের বিরুদ্ধে নিজ কার্যালয়ে মামলা করেন। এরপর সহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান ও সহকারী পরিচালক জাহিদুল ইসলাম তদন্ত করেন। তদন্তকালে সার্বিক পর্যালোচনায় মোহনের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ২ কোটি ৫৮ লাখ ৯২ হাজার ৩০৪ টাকা মূল্যমানের সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা প্রদান এবং তার নিজ নামে ও তার উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের নামের অবৈধ পন্থায় অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৮ কোটি ৮১ লাখ ৪ হাজার ৭৭ টাকা মূল্যমানের সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক জাহিদুল ইসলাম গত ৭ জুলাই বগুড়ার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। এতে আসামি মঞ্জুরুল আলম মোহনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের আইনজীবি (পিপি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত মঙ্গলবার ওই মামলার চার্জশিট গ্রহণের দিন ছিল। শুনানি শেষে আদালত আসামি মঞ্জুরুল আলম মোহনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করেন।