সারা বাংলা

হাতের চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে এসে লাশ হয়ে ফিরলেন গণি

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালের ‘অব্যবস্থাপনায়’ এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৭ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টার দিকে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের (৫ম তলা) বারান্দা থেকে নিচে পড়ে তার মৃত্যু হয়।

নিহত ওসমান গনি (৪৭) কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা। গত এক সপ্তাহ আগে হাতের অপারেশনের জন্য কুমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শী সুমন মিয়া নামের একজন বলেন, ‘‘গত রাতে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। দ্রুত নিচে গিয়ে দেখি, গনি মিয়ার লাশ পড়ে আছে। এ ঘটনার পরে সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক, ওয়ার্ড মাস্টার ও নার্সরা দ্রুত পালিয়ে যান।’’

নিহতের স্বজনেরা জানান, সপ্তাহখানেক আগে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাতের অপারেশনের জন্য এসেছিলেন গণি মিয়া। তবে, সিট পাননি। দুই দিন পরে দালালের মাধ্যমে ৫০০ টাকার বিনিময়ে হাসপাতালের বারান্দায় একটি সিট জোগাড় করেন। গত রাতে সেখান থেকেই পরেই তার মৃত্যু হয়।

তারা অভিযোগ করেন, সিট পাওয়ার পর চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়ি ফেরার কথা ছিল গণির। কিন্তু, কুমেক হাসপাতালের ‘অব্যবস্থাপনায়’ শেষ পর্যন্ত বাড়িতে ফিরলেন ঠিকই। তবে, লাশ হয়ে।

গনি মিয়ার স্ত্রী কোহিনুর বেগম বলেন, ‘‘আমার স্বামী চিকিৎসাসেবা নিতে এসেছিলেন। কিন্তু, হাসপাতালের ‘অব্যবস্থাপনায়’ তার জীবন প্রদীপ নিভে গেল।’’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘পাঁচ তলার বারান্দায় তাকে সিট দেওয়া হলেও যেখানে ছিল না কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা। আমি এর বিচার চাই।’’

এ বিষয়ে জানতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক পরিচালক ডা. মাসুদ পারভেজ ও সার্জারি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার বিল্লাল হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি।

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘‘লোকমুখে বিষয়টি শুনেছি। তবে, বিস্তারিত জানি না। এছাড়া, এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

এ বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের উপপরিচালক ডা. শাহজাহান বলেন, ‘‘রমজান মাসে রোগীর সংখ্যা একটু কম। কক্ষের ভেতরে বেড ছিল। চাইলে তিনি সেখানে চিকিৎসা নিতে পারতেন। গতকাল শুক্রবার রাতে বারান্দা সংলগ্ন বেডে তিনি নিজের ইচ্ছায় ছিলেন। গতকাল রাতে তিনি বেড থেকে পড়ে মারা যান। এটা অবশ্যই দুর্ঘটনা হিসেবে দেখছি। বারান্দা থেকে বেডগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এমন দুর্ঘটনা আর না ঘটে, সেজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সতর্ক থাকবে।’’