লোডশেডিং কমানোর দাবিতে রংপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অফিসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন গ্রাহকরা। বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সামেন এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে আসা গ্রাহকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিংয়ের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তীব্র গরম ও অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে সাধারণ মানুষ যেমন নানা সমস্যায় পড়ছেন, তেমনি সেচ সংকটের কারণে ক্ষতির মুখে পড়ছে ফসলের ক্ষেত। এ কারণে সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।
নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের বাসিন্দা সোহাগ হাসান বলেন, “শুরু থেকেই আমরা রংপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতি-২ এর আওতায় রয়েছি। অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে আমরা অতিষ্ঠ। গরমের এই সময়ে আধা ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে না। বিদ্যুৎ না থাকায় পরিবারের বয়স্কদের যেমন কষ্ট বেড়েছে তেমনি শিক্ষার্থীরও পড়ালেখা করতে পারছে না।”
তিনি আরো বলেন, “আমাদের বাড়ি যেহেতু নীলফামারী। আমরা চাই নীলফামারী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় আমাদের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হোক। কেননা যেকোন সমস্যায় রংপুর আসা আমাদের জন্য কষ্টকর। আমরা কোনো সমস্যায় পড়লে রংপুর পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরও সহজে পাই না।”
একই ইউনিয়নের বাসিন্দা আতিকুর রহমান চৌধুরি বলেন, “এখন ক্ষেতে বোরোসহ বিভিন্ন ফসল রয়েছে। এসব ফসলের জন্য ক্ষেতে সেচ দিতে হয়। যে কারণে আমাদের পল্লী বিদ্যুতের ওপর নির্ভর করতে হয়। তবে, আমরা কোনো রকম বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। দীর্ঘক্ষণ পর যদি বিদ্যুৎ আসে পানি ছাড়লে সে পানি জমিতে যাওয়ার আগেই আবার বিদ্যুৎ চলে যায়। আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।”
তিনি বলেন, “আমরা নীলফামারীর মানুষ। আমরা চাই, আমাদের বিদ্যুৎ সংযোগ নীলফামারী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে দেওয়া হোক, তাতে যদি কিছুটা সমস্যা কমে।”
ফুয়াদ বসুনিয়া বলেন, “দিনে ৮ থেকে ১০ বার বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করে। আমরা এই সমস্যার সমাধান চাই।”
রবিউল হোসেন সুজন নামে অপর গ্রাহক বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং কমানোর দাবি জানানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়েই আজ বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করে মানববন্ধন করছি।”
তিনি বলেন, “তিন প্রজন্ম ধরে আমরা রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতায় জিম্মি হয়ে আছি। আমরা এই জিম্মি দশা থেকে মুক্তি চাই। বর্তমান যে গরম তাতে মানুষের কষ্টের শেষ নেই, তার ওপর সারাদিন বিদ্যুৎ থাকে মাত্র দেড় থেকে দুই ঘণ্টা।”
লোডশেডিংয়ের কথা স্বীকার করে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার খোরশেদ আলম বলেন, “আমরা সবসময় গ্রাহকদের ভালো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। লোডশেডিংয়ে গ্রাহকদের কষ্ট হয়, আমরা তা বুঝি, কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই। ঝড়, বৃষ্টি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়। নীলফামারিতে আরো একটি সাবষ্টেশন নির্মাণ করার পরিকল্পনা চলছে। সেটি নির্মাণ হলে সমস্যা কিছুটা কমবে আশা করি।”