রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার পদ্মার চরে ১৯টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে একদল মানুষ। শনিবার (২৪ মে) বিকেলে উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের চর শাহামীরপুর এলাকার পদ্মার চরে ঘটনাটি ঘটে। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, হামলাকারীরা নগদ টাকা ও ধান নিয়ে গেছে।
রবিবার (২৫ মে) দুপুরে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পাংশা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হাসেম শেখ জানান, তারা গত ৪০ বছর ধরে পদ্মার চরে বসবাস করছেন। পাবনা জেলার লোকজন দাবি করছে, এই চর তাদের। শনিবার ১০০ মানুষ দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। এসময় তারা ভয়ে পাশের বনে লুকিয়ে ছিলেন।
তিনি বলেন, “আমার একটা পাওয়ার টিলার, একটা সেলো মেশিন, ৪০ মণ ধান ও নগদ এক লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে তারা।”
আমজাদ খান বলেন, “আমার বাপ এখানে থাকছেন। আমার জন্মও এখানে। আমরাও বুড়ো হয়ে যাচ্ছি। আমাদের জমির কাগজপত্র সবই আছে। পাবনা আওলারা বলতেছে, জমি তাদের। শনিবার ১০০ জন এসে আমাদের বাড়ি ভাঙচুর করে ও একটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিছে।”
ক্ষতিগ্রস্ত মো. কাশেম শেখ বলেন, “আমার বাড়ি ভেঙে দিয়েছে হামলাকারীরা। তারা ঘরে থাকা নগদ ২২ হাজার ৬০০ টাকা নিয়ে গেছে। শুধু আমার না, অনেকরই টাকা পয়সা নিয়ে গেছে। বোবা (বাক প্রতিবন্ধী) মো. তসলিমের নগদ টাকা ও একটা গরু বিক্রি করার টাকাও নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।”
তিনি বলেন, “১৯টি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট শেষে হামলাকারীরা একটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়। এখন আমরা আতঙ্কে আছি। আমরা আশাকরি, ডিসি স্যার ও এসপি স্যার আমাদের পাশে দাঁড়াবেন।”
ফুলি বেগম বলেন, “লোকজন আমাদের কাছে এসে বলে এ জমি তাদের, আমরা দখল করে আছি। আমি তখন বললাম, আমাদের কাগজ আছে । আপনারা কাগজ থাকলে নিয়ে আসেন। তারা কোনো কথা শুনলো না, বাড়ি ভেঙে দিল। আমার ঘরে গরু বিক্রির টাকা ছিল, ৫০ মণ ধান ছিল ওরা সব নিয়ে গেছে।”
পাংশা মডেল থানার ওসি (ওসি) রাশেদুল ইসলাম বলেন, “হামলার মূল কারণ জমির সিমানা নির্ধারণ নিয়ে। এপারের মানুষের দাবি জমি তাদের, ওপারের মানুষের দাবি জমি তাদের। খবর পেয়ে পুলিশ শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।”