সারা বাংলা

রমেকে হিমঘর থেকে মরদেহের চোখ উধাও, রংপুরে চাঞ্চল্য 

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘর থেকে এক মৃতদেহের চোখ উধাও হওয়ার ঘটনায় শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে চাঞ্চল্য। নিহত মাসুম মিয়ার স্বজনদের দাবি ময়নাতদন্তের আগ মুহূর্তে লাশ থেকে চুরি হয়েছে তার দুটি চোখ। অন্যদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন ইঁদুরের আক্রমণে এমন ঘটনা ঘটেছে।

নিহত মাসুম মিয়া নগরীর বুড়িরহাট বাহারদুর সিংহ এলাকার বাসিন্দা। পারিবারিক বিরোধে মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে তার উপর হামলা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হিমঘরে নিয়ে যায়।

পরদিন, বুধবার (২৮ মে) সকালে ময়নাতদন্তের সময় পরিবারের সদস্যরা দেখতে পান মরদেহের চোখ দুটি নেই। তারা অভিযোগ করেন, হিমঘরের অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি তদন্তের দাবি স্বজনদের। এ ঘটনার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী বলে মনে করেন তারা। এমন ঘটনায় নিহতের আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

নিহতের প্রতিবেশী আব্দুল জলিল বলেন, ‘‘মৃতদেহ সংরক্ষণ ব্যবস্থা আদিম যুগকেও হার মানিয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওষুধ চুরি হয় শুনেছি। এখন লাশের চোখও চুরি হচ্ছে। এখানে লাশ রাখাও নিরাপদ নয়। চোখ চুরির ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকারি হাসপাতালের বেহাল মর্গটি কেন সংস্কার করা হয় না, এর জবাব কার কাছে আমরা চাইবো।’’  

মেডিকেল মর্গের দায়িত্বে থাকা সর্দার মিজানুর রহমান জানান, হাসপাতালের মর্গের ফ্রিজিং ব্যবস্থা বিকল থাকায় মরদেহগুলো অরক্ষিতভাবে টেবিলের উপরে রাখা হয়। যে কারণে সেখানে ইঁদুর বা অন্য কোন ইদুর জাতীয় প্রাণী তার চোখ খেয়ে ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত টিম হওয়ার কথা। তদন্ত করলে আরও ক্লিয়ার হওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মানিক ইসলাম বলেন, ‘‘হিমঘরে ইদুরের উৎপাত বেড়েছে। প্রায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।’’   

আর সুরতহাল করা সাব ইন্সপেক্টর আবু হানিফ জানান, সুরতহাল করার সময় তার চোখে কোনো সমস্যা ছিল না। এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।

রংপুর মেট্রোপলিটন পরশুরাম থানার ওসি মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘খবর পেয়ে সকালে লাশ দেখতে গিয়েছিলাম। লাশের চোখ ছিল না। কি কারণে লাশের চোখ ছিল না, তা তদন্ত করা হচ্ছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’’  

এদিকে হাসপাতালের নানামুখী সংকটের কথা জানিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. আ.ম. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘‘ঘটনাটি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’