নওগাঁয় প্রতি বছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে আমের উৎপাদন। এ অঞ্চলে পানির সংকট থাকায় অন্যান্য ফসল চাষাবাদ ছেড়ে আম চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। এছাড়া, এ জেলায় আমের ফলনও ভালো হয়।
চাষি ও কৃষি বিভাগের দাবি, চলতি মৌসুমেও আম উৎপদনে শীর্ষে থাকবে নওগাঁ জেলা। গত বছরের চেয়ে ৩০০ হেক্টর বেড়ে এ বছর নওগাঁয় আম চাষ হয়েছে ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে। আম উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৫ মেট্রিক টন। প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার আম বেচা-কেনা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নওগাঁয় আম সংগ্রহের তারিখ নির্ধারণ করেছে জেলা প্রশাসন। নির্ধারিত তারিখের আগে আম পরিপক্ব হলে তা সংগ্রহের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে সনদ নিতে হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, নওগাঁয় আম্রপালি আমের চাষ সবচেয়ে বেশি হয়। উৎপাদিত আমের প্রায় ৭০ শতাংশই আম্রপালি। এছাড়াও নওগাঁয় বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা হয় বারি-৪, ল্যাংড়া, গৌড়মতি, আশ্বিনা, হিমসাগর, গোপালভোগ ও কাটিমন আম।
আমের মান বজায় রাখতে আগে থেকেই সংগ্রহের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। গত ২২ মে গুটি ও ৩০ মে গোপালভোগ জাতের আম পাড়া শুরু হয়েছে। ক্ষীরশাপাত ও হিমসাগর ২ জুন, নাগ ফজলি ৫ জুন, ল্যাংড়া ও হাড়িভাঙ্গা ১০ জুন, ব্যানানা ম্যাংগো ও ফজলি আম ২৫ জুন, আম্রপালি ১৮ জুন এবং আশ্বিনা, বারী-৪ ও গৌরমতি জাতের আম সর্বশেষ ১০ জুলাই থেকে পাড়া যাবে।
গত ১২ মে বিভিন্ন জাতের আম সংগ্রহের সময়সীমা নির্ধারণের বৈঠকে নওগাঁর জেলা প্রশাসক আবদুল আউয়াল বলেছেন, নির্ধারিত সময়ের আগে কোনোভাবেই অপরিপক্ব আম সংগ্রহ কিংবা বাজারে তোলা যাবে না। তবে, সময়ের আগে আবহাওয়ার কারণে আম পরিপক্ব হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী আমচাষিরা তারিখ পুনর্নির্ধারণ করে সময়ের আগে আম সংগ্রহ করতে পারবেন। আমে ভেজাল ঠেকাতে এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় আমের বাজার—সাপাহার উপজেলা সদর বাজার, পোরশার নোচনাহার, সারাইগাছিসহ বিভিন্ন বাজারে বিশেষ নজরদারি করবে প্রশাসন।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলছেন, নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির সংকটের কারণে অন্যান্য ফসলের চেয়ে আম চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নওগাঁর চেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রায় ৭ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আম চাষ হলেও নওগাঁর আম বাগানগুলো নতুন হওয়ায় ফলন হয় বেশি। তাই, আমাবাগানের আয়তনে এ জেলা দ্বিতীয় বৃহত্তম হলেও উৎপাদনে প্রথম স্থানে আছে।