নকল প্রতিরোধ এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে নিজের প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ রাখা হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ১০টায় বাংলা প্রথমপত্রের মাধ্যমে এ পরীক্ষা শুরু হবে। এবারের পরীক্ষায় কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া— এই ছয় জেলার মোট ১ লাখ ১ হাজার ৭৫০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে।
চলতি বছর কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে রেজিস্ট্রেশন করা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ হাজার ৪৪০ জন অংশ নিচ্ছে না। অর্থাৎ প্রায় ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়েছে। ঝরে পড়ার এ হার আগের বছর থেকে কিছুটা কমেছে। পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য তারা ফরম পূরণ করেননি। বিদেশে যাওয়া, বাল্যবিবাহ, পারিবারিক সংকট ও অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা— এমন নানা বাস্তবতায় শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে না।
এ বছর কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে ৪৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৯২টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগের বছরগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার নিজের প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা না দিতে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বসে পরীক্ষা দিতে পারছে না। বোর্ড কর্তৃপক্ষ মনে করছে, এতে কেন্দ্রভিত্তিক প্রভাব ও অনিয়ম প্রতিরোধ সহজ হবে।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি জেলায় বোর্ডের তত্ত্বাবধানে রয়েছে বিশেষ পর্যবেক্ষক দল। প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও বিতরণের পুরো প্রক্রিয়া স্থানীয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। অনিয়ম রোধে কেন্দ্র সচিব, পরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের দেয়া হয়েছে কড়া নির্দেশনা।
পরীক্ষার্থীদের সংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, এবার কুমিল্লা বোর্ডে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৪২ হাজার ৭৪১ জন, আর ছাত্রী ৫৯ হাজার ৯ জন। মানবিক বিভাগে পরীক্ষার্থী রয়েছে সবচেয়ে বেশি, ৪৭ হাজার ৯৫৮ জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ২৭ হাজার ৫৫৪ জন এবং বিজ্ঞান বিভাগে ২৬ হাজার ২৩৮ জন।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শামসুল ইসলাম জানান, পুরোপুরি নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। করোনার ঝুঁকি বিবেচনায় প্রতিটি শিক্ষার্থীকে মাস্ক পরে কেন্দ্রে আসার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রগুলোতে মাস্ক সরবরাহের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।