সারা বাংলা

গফরগাঁওয়ে দুই শিশু নিখোঁজ, মুক্তিপণ দাবি, পুকুরে মিলল একজনের লাশ

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় পাশাপাশি গ্রামের দুই প্রবাসীর দুই শিশুসন্তান প্রায় একই সময়ে নিখোঁজ হয়। শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে নিখোঁজের পর শনিবার উপজেলার পাঁচবাগ ইউনিয়নের চরশাঁখচূড়া গ্রামের একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

পরিবারের অভিযোগ, হত্যার পর লাশটি পুকুরে ফেলা হয়েছে। রাত ১০টায় এই রিপোর্ট লেখ পর্যন্ত সময়ে অন্য শিশুর খোঁজ মেলেনি। মৃত শিশুটির নাম সিফাত (১১)। সে উপজেলার পাঁচবাগ ইউনিয়নের চরশাঁখচূড়া গ্রামের সৌদিপ্রবাসী নুরুল ইসলামের ছেলে ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

নিখোঁজ আরেক শিশুর নাম সাদাব হোসেন (৫)। সে নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের বারঘরিয়া গ্রামে সৌদিপ্রবাসী আল আমিনের ছেলে। সে মায়ের সঙ্গে গফরগাঁও উপজেলার পাঁচবাগ ইউনিয়নের দীঘিরপাড় গ্রামে নানাবাড়িতে থাকত। সেখান থেকেই শিশুটি নিখোঁজ হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিফাত ও সাদাবের বাড়ির মধ্যে দূরত্ব প্রায় আড়াই কিলোমিটার। গ্রাম দুটি পাশাপাশি অবস্থিত। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার চরশাঁখচূড়া থেকে নিখোঁজ হয় সিফাত। একই সময়ে বাসা থেকে বের হয়ে আর ঘরে ফেরেনি সাদাব। নিখোঁজের ঘটনায় দুই পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।

সাদাবের স্বজনেরা জানান, নিখোঁজের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা হয়। পরে রাতে দুই দফা একটি নম্বর থেকে কল দিয়ে সাদাবকে ফেরত দেবে বলে ২৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র। এরপর থেকে ওই নম্বর বন্ধ রয়েছে।

সিফাতের মা সাবিনা খাতুন অভিযোগ করেন, একই এলাকার আরমান হোসেন (২৪) নামের এক ছেলে তার মেয়েকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন। গত বুধবার রাতে বাড়িতে গিয়ে তার মেয়েকে হুমকি-ধমকিও দেন আরমান। সিফাত নিখোঁজের পর থেকে আরমান পলাতক রয়েছেন বলে জানান তিনি।

পাগলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহা. ফেরদৌস আলম বলেন, ‘‘সিফাত নিখোঁজের পর থেকে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন স্বজনেরা। তবে, কোথাও না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তারা। শনিবার সকালে সিফাতের মরদেহ পুকুরে ভাসতে দেখে থানায় খবর দেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। শিশুটির ঘাড় ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘অপরদিকে, সাদাবের স্বজনদের ফোন করে টাকা নেওয়া নম্বরটির লোকেশন ট্র্যাক করা হয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সাদাবকে দ্রুত উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’’