জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ও সমাবেশকে ঘিরে বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরের পর থেকে হামলা-সংঘর্ষে গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
হাতবোমা, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপের বিকট শব্দ আর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে আতঙ্কে শহরের অধিকাংশ এলাকায় দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষের চলাচলও সীমিত হয়ে পড়েছে।
এনসিপির পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চলানো হয়।
বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে এনসিপির নেতাকর্মীরা গাড়িবহর নিয়ে শহরে ঢোকার আগেই পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে সংঘাতের সূত্রপাত হয়। পরে ইউএনওর গাড়িতেও হামলা করা হয়। এরই মধ্যে বেলা দেড়টার দিকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) কর্মীরা মিছিল নিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্ক এলাকায় এনসিপির সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায় বলে এনসিপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন।
হামলার ঘটনার পর এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে। এ সময় পুলিশ-সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে প্রচুর গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। সমাবেশ এলাকায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হামলাকারীদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সেখানে প্রচুর লোকজনকে লাঠি হাতে দেখা গেছে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করছেন। পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে তাদের পিছু হটানোর চেষ্টা করছে। শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি। মাসব্যাপী এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জে পদযাত্রা করছে দলটি। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ‘১৬ জুলাই: মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় দলটি।