চাঁদপুরের হাইমচরের মেঘনা নদীতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জাল ফেলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ছে না। এতে বাজারে ইলিশের দামও চড়া। অবশ্য মৎস্য বিভাগ বলছে, এখনো নদীতে ইলিশ ধরার মৌসুম পুরোপুরি আসেনি।
বুধবার (১৬ জুলাই) হাইমচরের মেঘনা নদীর তীরবর্তী জেলে পাড়ায় ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
চাঁদপুরের চরভৈরবী ঘাটে বর্তমানে ১ কেজি ওজনের ইলিশ ২২০০ টাকায়, ৫০০ গ্রামেরটা ১৪৫০ টাকা কেজি, সোয়া কেজি ওজনের ইলিশ ২৬০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।
ইলিশের দাম বৃদ্ধি নিয়ে জেলে আব্দুর রশিদ বলেন, ‘‘নদীতে ইলিশ দিন দিন কমে যাচ্ছে। আবার চাহিদা বেশি হওয়ার কারণে দাম বাড়ছে।’’
হাইমচর চরভৌরবী মাছ ঘাটের কোষাধ্যক্ষ শহীদ আখন বলেন, ‘‘যেভাবে ইলিশ মাছের সঙ্কট দেখা দিয়েছে, যদি মেঘনা নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি না করা হয়; তাহলে মেঘনায় ইলিশ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।’’ তিনি দ্রুত মেঘনা নদীর নাব্যতা বৃদ্ধির দিকে সরকারকে নজর দেয়ার আহ্বান জানান।
চরভৌরবী মাছ ঘাটের আড়তদার কাজল সর্দার বলেন, ‘‘ভরা বর্ষায়ও জেলেরা ইলিশ পাচ্ছে না। সমুদ্রের মোহনা শুকিয়ে গেছে। এর কারণে সমুদ্রে প্রচুর মাছ থাকার পরও নদীতে তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। জেলেরা নদী থেকে কয়েকটি ইলিশ নিয়ে, আবার কেউ খালি হাতে ফিরছে।’’
ইলিশ যেহেতু নদীর তলদেশের মাছ। কাজেই কী ধরনের জাল ফেললে নদীর তলদেশ থেকে ইলিশ জালে ধরা পড়বে, সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ চান তিনি।
চাঁদপুরের হাইমচরের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ বি এম আশরাফুল হক জানান, নদী ও নদীর মোহনার চর-ডুবোচর সৃষ্টি হওয়ায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। একইসঙ্গে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও জলবায়ুর পরিবর্তন দিন দিন ত্বরান্বিত হচ্ছে। নদীর নাব্যতা সংকট, নদীর মোহনা এলাকায় শিল্পায়নের প্রবণতা, ইলিশ ও জাটকার সামাজিক সুরক্ষার ঘাটতি এবং অতি আহরণসহ নানা কারণে ইলিশ কমছে।
তিনি আরো বলেন, ‘‘বৃষ্টিপাত বেড়েছে এবং নদীতে স্রোত ও পানি বাড়ছে। ফলে ইলিশের আহরণ এখন একটু কম হলেও সামনে মৌসুম রয়েছে, তখন জেলের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা করছি।’’