ফেনীর মহিপালে ছাত্র আন্দোলনের সময় কলেজ শিক্ষার্থী মাহবুবুল হাসান মাসুম হত্যা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। পুলিশ আশা করছে, চলতি মাসেই তারা চার্জশিট আদালতে জমা দিতে পারবে।
ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, “মামলাটি তদন্ত শেষ পর্যায়ে। আশা করছি, চলতি মাসেই চার্জশিট আদালতে দাখিল করা সম্ভব হবে।”
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ফেনীর সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ ফেনী আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হন কলেজ শিক্ষার্থী মাহবুবুল হাসান মাসুম। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭ আগস্ট তার মৃত্যু হয়। মাসুম সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং ছাগলনাইয়ার আব্দুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক সম্পন্ন করেন।
ঘটনার এক মাস পর ৪ সেপ্টেম্বর মাসুমের ভাই মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে ১৬২ জনের নাম উল্লেখ এবং নাম না জানা ৪০০–৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।
নিহত মাসুমের ভাই মাহমুদুল হাসান বলেন, “আমার ভাই কোনো দলের রাজনীতিতে জড়িত ছিল না। শুধু অন্যায়ের প্রতিবাদে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। মাথায় গুলি লেগে সে মারা যায়। আমরা চাই, চার্জশিট দ্রুত দাখিল হোক এবং আসামিদের বিচার শুরু হোক।”
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অভিযুক্ত অন্যদের মধ্যে রয়েছেন—ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল, পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, ছাগলনাইয়ার সাবেক চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, দাগনভূঞার সাবেক চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, সোনাগাজীর সাবেক চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, পরশুরামের সাবেক মেয়র নিজাম আহমেদ সাজেল এবং যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম পিটু ও জিয়া উদ্দিন বাবলু।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বলেন, “এখন পর্যন্ত ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।”