ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মারা যাওয়া ১০ বছরের আয়মানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় শরীয়তপুরের ভেদেরগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর গ্রামে জানাজা শেষে তাকে তার দাদার কবরের পাশে দাফন করা হয়।
আজ সকাল ৯টা ৩২ মিনিটে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আয়মানের মৃত্যু হয়। তার শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
আয়মান শরীয়তপুরের ভেদেরগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেন ও আয়েশা আক্তার দম্পতির মেয়ে। সে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শ্রেণি কক্ষের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল আয়মান। বিমান বিধ্বস্ত হলে দগ্ধ হয় সে। এরপর শিক্ষকদের কাছে ছুটে যায়। শরীর দগ্ধ হওয়ার খবর শিক্ষকদের মোবাইল থেকে দাদি রুমা বেগমকে জানায় আয়মান। পরিবারের সদস্যরা স্কুলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আজ শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
সন্ধ্যায় তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। এ সময় তাকে শেষবারের মতো দেখতে স্বজন ও এলাকার মানুষ বাড়িতে ভিড় করেন। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। পরে জানাজা শেষে নারায়ণপুর গ্রামে দাদার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
আয়মানের চাচাতো বোন তাসফিয়া জাহান ইকরা বলেন, “আইমান আমার খেলার সঙ্গী ছিল। এখন সে নেই—আমি কার সঙ্গে খেলব? আল্লাহ তাকে জান্নাত দিক।”
আয়মানের ছোট মামা ইমরুল কায়েস বলেন, “আমার ভাগ্নি ক্লাস শেষে দোলনায় দোল খাচ্ছিল। বিমান বিধ্বস্ত হলে সে গুরুতর আহত হয়। তিনদিন জীবনযুদ্ধ চালিয়েও শেষরক্ষা হয়নি। আজ সকালে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আমাদের আদরের আয়মানের মৃত্যু হয়।”
তিনি বলেন, “চিকিৎসা সেবা নিয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। আয়মান সর্বোচ্চ চিকিৎসা পেয়েছে।”
আরো পড়ুন: মাইলস্টোন ট্র্যাজিডি: বার্ন ইউনিটে আরো ১ শিশুর মৃত্যু
ভেদরগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও মোহাম্মদ মোজাহেরুল হক বলেন, “মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা নিহত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং জানাজায় অংশ নিয়েছি। এ ঘটনায় ভেদরগঞ্জ উপজেলায় দুইজন প্রাণ হারিয়েছেন। শোকাহত পরিবারগুলোর পাশে আমরা সবসময় থাকব।”