সারা বাংলা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ২ বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধার

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী পদ্মা নদী থেকে দুইটি ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২ আগস্ট) উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের নিশিপাড়া ও বিশরশিয়া এলাকার নদী থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) দুই ব্যক্তিকে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করেছে। 

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, দুই ব্যক্তিকে বিএসএফ হত্যা করেছে কি-না তা তারা নিশ্চিত না। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। বিএসএফ বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- শিবগঞ্জের মনাকষা ইউনিয়নের তারাপুর-হঠ্যাৎপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধ সেরাজুল ইসলামের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪৫) এবং একই এলাকার গোলাম মর্তুজার ছেলে সেলিম রেজা (৩৭)। তারা পেশায় জেলে।

স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে ভারতে প্রবেশ করে নিখোঁজ হন শফিকুল ও সেলিম। সন্তানদের সন্ধান পেতে ভারতে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করেন তাদের পরিবার। তবে, তাদের সন্ধান মেলেনি।

আজ শনিবার দুপুরে নিশিপাড়া এলাকায় শফিকুলের এবং বিশরশিয়া এলাকার পদ্মা নদীতে ভাসমান অবস্থায় সেলিম রেজার মরদহে উদ্ধার হয়। 

শিবগঞ্জের মনাকষা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. সমির উদ্দীন বলেন, “গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হন শফিকুল ও সেলিম। ধরণা করা হচ্ছে, নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে তারা ভারতের অভ্যন্তরে চলে যান। ভারতের বিএসএফ তাদের চোরাকারবারিভেবে আটক করে হত্যা করতে পারে। নদী থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তারাপুর এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, মারা যাওয়া দুইজন জেলে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তারা ভারতে গরু আনতে যান। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের বিএসএফের সদস্যরা আটক করে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করেছে। শফিকুলের শরীরে বৈদ্যুতিক শক ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সেলিমের শরীর অর্ধগলিত হওয়ায় কোনো আঘাতের চিহ্ন বোঝা যাচ্ছিল না।

গোদাগাড়ি নৌ-পুলিশের ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “পদ্মা নদী থেকে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের একজনের শরীর ঝলসানো এবং অপর জনের গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তারা গত বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে জানা গেছে।”

শিবগঞ্জ থানার ওসি মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, “সীমান্ত এলাকায় পদ্মা নদী থেকে দুইজনের মরদেহ ভাসতে দেখে বিজিবি ও আমাদের খবর দেন এলাকাবাসী। এরপরেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। দুইটি মরদেহ অর্ধগলিত। এ কারণে স্পষ্টভাবে আঘাতের চিহ্ন বোঝা যাচ্ছে না।”

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু বলেন, “মাসুদপুর বিজিবি ক্যাম্পের আওতাধীন এলাকার পদ্মা নদীতে দুইজনের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানানো হয়। মৃত্যুর রহস্য রেব করতে পুলিশই পারবে, সেজন্য তাদেরই জানানো হয়েছে। ওই দুই ব্যক্তিকে বিএসএফ হত্যা করেছে কি-না আমরা নিশ্চিত না। নিহেতের পরিবারের সদস্যরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।”

তিনি আরো বলেন, ‘স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা ভারতের ৭১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা বিষয়টি অস্বীকার করেছে।”