সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের মোবাইল ফোন এখন পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে তুহিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা গেলে ঘটনার রহস্য আরও বেশি স্পষ্ট হতো। এমনকি ঘুড়ে যেতে পারে এই হত্যাকাণ্ডের মোড়- এমনটাই বলছে সচেতন মহল ও সাংবাদিক সমাজ।
নিহত সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮) দৈনিক ‘প্রতিদিনের কাগজ’র গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। তার সহকর্মী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তুহিন দু’টি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন। তিনি চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার ভিডিও ধারণ করতেন। স্পর্শকাতর না হলে তিনি ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিতেন।
হত্যাকাণ্ড সংঘটিত চান্দনা চৌরাস্তা এলাকাতেই অধিকাংশ সময় কাটাতেন তুহিন। যে কারণে এলাকায় তিনি মোটামুটি পরিচিত ছিলেন এবং এলাকার অনিয়ম ও অপরাধীদের সম্পর্কে তিনি ধারণা রাখতেন।
ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজের চিত্র ও পুলিশের ভাষ্যমতে, গত বৃহস্পতিবার বাদশা নামে এক ব্যক্তি ব্যাংক থেকে ২৫ হাজার টাকা তুলে ফিরছিলেন। এ সময় আসামি গোলাপী তাকে হানিট্র্যাপে ফেলার চেষ্টা করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে বাদশা তাদের পাশ কাটিয়ে যেতে চায়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় আগে থেকে ওৎপেতে থাকা অন্য আসামিরা এসে বাদশাকে ঘিরে ফেলে কোপানো শুরু করে। বাদশা প্রাণ বাঁচাতে দৌড় দেয়।
এ ঘটনা সাংবাদিক তুহিন পেশাগত কারণে মোবাইল ফোনে ভিডিও করে। আসামিরা তখন তুহিনকে ভিডিও ডিলিট করতে বলে। কিন্তু তুহিন রাজি হননি। এ পর্যায়ে আসামিরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে প্রথমে চান্দনা চৌরাস্তায় শাপলা ম্যানশনে সন্ত্রাসীরা বাদশার ওপর হামলা করে। ওই ঘটনার ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর ঘটনাস্থলের ঠিক বিপরীত পাশে মসজিদ মার্কেটের সামনে চায়ের দোকানে তুহিনের উপর হামলা চালানো হয়। এ সময় সন্ত্রাসীদের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শোডাউন দিতেও দেখা গেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন খান বলেন, “নিহত সাংবাদিকের দু’টি মোবাইল ফোন ছিল কিন্তু এখনো তার খোঁজ আমরা পাইনি। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদেও পাওয়া যায়নি ফোন। আমরা তার নম্বর ট্রেকিং করে রেখেছি। ফোন বন্ধ থাকায় লোকেশনও সনাক্ত করা যাচ্ছে না। আমরা ফোনটি উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”