সারা বাংলা

আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সাইনবোর্ড

এবার আওয়ামী লীগের কার্যালয় দখলে নিয়ে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে কার্যক্রম শুরু করার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব বেলকুচি উপজেলা শাখা কমিটির বিরুদ্ধে।

এই সাইনবোর্ড ঝুলানো বেশ কয়েকটি স্থিরচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে জেলা জুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে।  

সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌর শহরের চালা এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের দ্বিতল ভবনে হঠাৎ করেই বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব বেলকুচি উপজেলা শাখার সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। তবে ভবনটির বাম দিকে বিএনপির সাইনবোর্ড ঝুলছে।

জানা যায়, ২০২৪ সালের (৫ আগস্ট) আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কার্যালয়টি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ৬ আগস্ট উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডলের নেতৃত্বে কার্যালয়টি দখল করে বিএনপির সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলেও বিএনপির সাইনবোর্ড সরানো হয়নি।

এর কিছুদিন পরে একই কার্যালয়ে এবার বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সাইনবোর্ড ঝুলছে। কিন্তু ২০১৭ সালে সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস দোতলা এই কার্যালয়টি নির্মাণ করেছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, বেলকুচি উপজেলায় যারা মূল ধারার সাংবাদিক, তাদের কেউ এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নেই। নাম স্বর্বস্ব কয়েকটি অনলাইন পত্রিকার পরিচয়ধারীরা এ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। সেসব সাংবাদিকরাই রাজনৈতিক কার্যালয়টিতে সাইনবোর্ড টানিয়েছে। সাংবাদিকরা জাতির বিবেক হয়ে কখনোই কোনো দলীয় কার্যালয় কিংবা কারো ভবন দখলে নিয়ে নিজেদের অফিস করতে পারে না বলে দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে বেলকুচি উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, “আওয়ামী লীগের ওই কার্যালয়টিতে বিএনপির সাইনবোর্ড টাঙানো হলেও এখন পর্যন্ত সেখানে বিএনপির কেউ বসেনি। কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব নামে একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো হয়েছে। সেখানে তারা বসেও বলে শুনছি। বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব নামে সংগঠনটির সাংবাদিকরা কেউ মূল ধারার সাংবাদিকতায় জড়িত নয়।”

বাংলাদেশ প্রেসক্লাব বেলকুচি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান জুয়েল বলেন, “আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সাইনবোর্ড টাঙানো হয়নি। উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক সাহেব আমাদের বসার জন্য একটি রুম দিয়েছে। সেখানে বসেই আমরা কার্যক্রম চালাচ্ছি।”

তবে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল বলেন, “উপজেলা আওয়ামী লীগের জায়গাটা আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি। ২০০৯ সালের আগে এখানে বিএনপির কার্যালয় ছিল। সাবেক মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস, তার মেয়ের জামাই ও জামাইয়ের ভাইয়েরা জায়গাটি দখল করে।”

তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পর আমাদের লোকজন সাইনবোর্ড লাগালেও আমরা কেউ সেখানে যাওয়া আসা করি না। কারণ জায়গা আমার হলেও ভবনটি আওয়ামী লীগের। আমি উপজেলার বাইরে ছিলাম। এর মধ্যে সেখানে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সাইনবোর্ড কারা লাগিয়েছে বিষয়টি আমার জানা নেই।”