মো. আবুল বাশার (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ ব্যবসায়ী স্ত্রী, একমাত্র মেয়ে ও জামাতার নির্যাতনের শিকার হয়ে বাড়ি ছেড়ে পথে পথে ঘুরছেন। স্ত্রীর বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন তিনি।
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার লখপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাশার। বাবার নাম আব্দুস সোবহান। নিজের বাড়ি স্ত্রী লিখে নেওয়ার পর তার জীবনে নেমে আসে দুঃসহ এমন সময়।
আবুল বাশার জানান, জীবনের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে সাড়ে ১২ শতক জমি কিনে গ্রামে বাড়ি করেন তিনি। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে সুখের সংসার ছিল তার। কিন্তু ২০১২ সালে কৌশলে তার স্ত্রী নাসরিন বেগম ওই বাড়ি-জমি নিজের নামে দানপত্র দলিল করে নেন।
আবুল বাশারের অভিযোগ, ২০১৯ সাল থেকেই নাসরিন বেগম, মেয়ে নুসরাত তাসনিম তামান্না এবং জামাতা আবু ইউসুফ তাকে মারধর, হুমকি ও খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
আবুল বাশার বলেন, “আমার সব কিছু থাকলেও আমি আজ বাড়ি ছাড়া। স্ত্রী ও মেয়ে খারাপ ব্যবহার করে। বাড়ি গেলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। জামাইও বিভিন্ন লোক দিয়ে মোবাইলে হুমকি দিচ্ছে।’’
‘‘২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর বিকেলে তারা আমাকে মেরে বের করে দিয়েছে,’’ উল্লেখ করে আবুল বাশার বলেন, ‘‘আমি থানায় অভিযোগ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এখন নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছি। আমি জমি ফেরত চাই এবং শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই।”
আবুল বাশারের প্রতিবেশী জয়নাল আবেদিন বলেন, “খুব কষ্ট করে আবুল বাশার এই জমি কিনেছিলেন। কিন্তু শেষ বয়সে স্ত্রীকে দলিল দিয়ে এখন রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমরা চাই আইনগতভাবে তার জমি ফেরত দেওয়া হোক।’’
আরেক প্রতিবেশী মো. আওলাতুল বলেন, “নিজের ঘরবাড়ি থাকতে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো একজন বৃদ্ধ মানুষের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর। তার স্ত্রী-মেয়ে-জামাইসহ সবাইকে নিয়ে এর বিহিত করা উচিত যাতে তিনি নিজ বাড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারেন।।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়ে নুসরাত তাসনিম তামান্না বলেন, “আমরা চাই না বাবা-মা আলাদা থাকুক। জমি মায়ের নামে থাকলেও ভোগদখল করেন বাবা। আমার নামে যে দোকান ছিল, তা ফেরত দিয়েছি বাবাকে।”
অন্যদিকে স্ত্রী নাসরিন বেগম বলেন, “আমিও চাই আমার স্বামী আমার সঙ্গে মিলেমিশে থাকুক। কিন্তু তিনি মানুষের প্ররোচনায় আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। আমি যদি জমি লিখে দেই, তাহলে আমার কোনো নিরাপত্তা থাকবে না। তাই জমি লিখে দেওয়া সম্ভব নয়।”