হবিগঞ্জে ন্যাশনাল টি কোম্পানির অন্যতম একটি তেলিয়াপাড়া চা-বাগান। এ বাগানের ফাঁড়ি বাগান সাতছড়ি চা বাগান। প্রায় ৩ হাজার একর পাহাড়ি জমিতে গড়ে ওঠা ফাঁড়িসহ তেলিয়াপাড়া চা বাগানটি দর্শনে মুগ্ধ হবেন যে কেউ। বাগানটি প্রকৃতিতে আলাদা দ্যুতি ছড়াচ্ছে।
বাগানটির একপাশে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও চাকলাপুঞ্জি চা বাগান। অপরপাশে আছে সুরমা চা বাগান এবং অন্যদিকে ভারত সীমান্ত। এমন অবস্থানে থাকা তেলিয়াপাড়ার চিরহরিৎ রূপ সহজেই মন কেড়ে নিচ্ছে পর্যটকদের। প্রতি বছরের মতো তেলিয়াপাড়া চা বাগানে এ মৌসুমে চায়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। আর সবই সম্ভব হয়েছে শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে গভীর সমন্বয়ের কারণে।
শ্রমিকদের পদচারণায় মুখরিত তেলিয়াপাড়া পাখপাখালীও আরেকটি আকর্ষণ। এখানে প্রায় ১ হাজার ৩০০ শ্রমিক চা-পাতা উৎপাদনের কাজে জড়িত। বাগান কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় শ্রমিকরা শান্তিতে বসবাস করছেন। তারা বাগানের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে মনের আনন্দে উৎপাদন কাজে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন।
নিয়মানুযায়ী বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে চা পাতা উৎপাদন শুরু হয়ে চলে ডিসেম্বর পর্যন্ত। তাই এখন পুরোদমে নারী শ্রমিকরা গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করছেন। তাদের সঙ্গে পুরুষ শ্রমিকরাও নানাভাবে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।
তেলিয়াপাড়া বাগানকে আরো চিরহরিৎ করতে নতুন করে ছায়াবৃক্ষ লাগানো হয়েছে। চায়ের গাছে গাছে নতুন কুঁড়ি ছাড়ছে। নিয়ম মেনে শ্রমিকরা এগুলো সংগ্রহ করে কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিচ্ছেন।
এ বছরে তেলিয়াপাড়া লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রায় ৫ লাখ কেজির। শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের গভীর সমন্বয়ে বাগানটিতে এ মৌসুমে চায়ের বাম্পার ফলন হওয়ায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের আলাপ হয়। তারা বাগানের ম্যানেজার দেওয়ান বাহাউদ্দিন আহমেদ লিটনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তারা জানান, তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ভাল ফলনের কারণও তিনি। অফিস স্টাফ এবং শ্রমিকরাও তার কথায় মুগ্ধ হয়ে কাজে আরো মনোযোগী হচ্ছেন।
হবিগঞ্জের পাহাড় বেষ্টিত চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলায় ন্যাশনাল টি কোম্পানির চারটি চা বাগান রয়েছে। বাগানগুলো হল তেলিয়াপাড়া, জগদীশপুর, পারকুল ও চন্ডিছড়া। বাগানগুলো চা-পাতা উৎপাদনের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায়ও ভাল ভূমিকা রাখছে।