শরীয়তপুরে জেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত পার্কের নাগরদোলার একটি খাঁচা খুলে নিচে পড়ে তিন শিশু-কিশোর আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে গুরুতর দুইজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে শরীয়তপুর পার্কে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
আহতরা হলেন- আব্দুল্লা (১১), সিজান (১২) ও মিরাজ হাওলাদার (১৫)। তারা সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের সামনে ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির পাশে পার্ক নির্মাণ করেছে জেলা প্রশাসন। শরীয়তপুর পার্ক নামে এটি চালু করা হয়। চারদিকে সীমানাপ্রাচীর ঘেরা ভেতরে শিশুদের খেলার জন্য রয়েছে অন্তত ২০টি বিভিন্ন ধরনের রাইড। সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটিতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে শিশুদের এখানে নিয়ে আসেন অভিভাবকরা।
আজ শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় পার্কজুড়ে ছিল শিশু কিশোরদের হৈ-হুল্লোড়। বিভিন্ন রাইডে চড়ে আনন্দ-উল্লাসে মেতে ছিল তারা। হঠাৎ বিকট আওয়াজ করে নাগরদোলার একটি খাঁচা মাটিতে আছড়ে পড়ে। কিছু মুহূর্তের জন্য থমকে যায় পুরো আনন্দ। স্বজন ও পার্কে ঘুরতে আসা লোকজন দ্রুত ছুটে গিয়ে খাঁচার ভেতর থেকে আব্দুল্লা, সিজান ও মিরাজকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। গুরুতর দুইজনকে ঢাকায় পাঠান চিকিৎসক।
আহত মিরাজ হাওলাদার বলেন, “আমি মামা বাড়িতে বেড়াতে এসেছি। এক মামা আর মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে পার্ক ঘুরতে যায়। আমরা পার্কের নাগরদোলায় উঠি। হঠাৎ শব্দ হয়ে নাগরদোলার খাঁচাটি নিচে পড়ে যায়। অনেক উপর থেকে পড়ায় আমরা সবাই আহত হই। আমি অজ্ঞান ছিলাম, জ্ঞান ফেরার পর দেখি হাসপাতালে।”
প্রত্যক্ষদর্শী জাহিদ হাসান বলেন, “আমি পার্ক ঘুরতে আসি। হঠাৎ দেখি, নাগরদোলার একটি খাঁচা ভেঙে নিচে পড়ে গেছে। আমরা দৌঁড়ে গিয়ে দেখি, খাঁচার মধ্যে তিনটি শিশু রয়েছে। আমরা তাদের ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
মিরাজ হাওলাদারের চাচাতো ভাই সোয়াদ বলেন, “আমার চাচাতো ভাই নাগরদোলা ভেঙে পড়ে আহত হয়েছে শুনে আমি হাসপাতালে এসেছি। ওর সঙ্গে থাকা আহত অন্য দুইজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। একটি সরকারি শিশু পার্কে এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমরা চাই, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।”
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা লিমিয়া সাদিনা বলেন, “পার্কের নাগরদোলার খাঁচা খুলে পড়ে আহত তিন শিশুকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাদের মধ্যে দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।”
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, “আমরা আহত শিশুদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠিয়েছি। কী কারণে এমন ঘটনা, এটি যান্ত্রিক ত্রুটি নাকি অন্য বিষয় তা খতিয়ে দেখা হবে।”