সারা বাংলা

‘নির্বাচন চাই না, শান্তি চাই’

কিশোরগঞ্জের বহুল আলোচিত পাগলা মসজিদের ১৩টি সিন্দুক বা দানবাক্স চার মাস ১৭ দিন পর আজ শনিবার (৩০ আগস্ট) খোলা হয়েছে। বরাবরের মতো এবারও পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। এর পাশাপাশি অনেকগুলো চিরকুট পাওয়া গেছে। এসব চিরকুটে আল্লাহর কাছে বিভিন্ন বিষয়ে প্রার্থনার কথা লিখেছেন নানা মানুষ। 

শনিবার (৩০ আগস্ট) সকাল ৭টায় কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এ সময় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

দানবাক্সে টাকার সঙ্গে পাওয়া একটি চিরকুটে লেখা রয়েছে, “দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ। আমরা নির্বাচন চাই না, দেশে শান্তি চাই। এই দেশে বহু দল আছে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য, একটা দলকে যেন আল্লাহ কবুল করে নেয়।”

আরেকটি চিরকুটে লেখা রয়েছে, “শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে; শেখ হাসিনা বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে; জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।”

এছাড়াও পড়াশোনার প্রতি সন্তানের মনযোগ বৃদ্ধি, ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা দান, নিজের ফ্ল্যাট কেনার সক্ষমতা দান, স্বামী যেন বেশি বেশি ভালোবাসে—এরকম আল্লাহর কাছে নানা চাওয়ার কথা লিখেছেন বিভিন্ন মানুষ।

শনিবার সকালে দানবাক্সের টাকাগুলো ৩২টি বস্তায় ভরে নেওয়া হয় পাগলা মসজিদের দোতলায়। টাকা ছাড়াও বরাবরের মতো স্বর্ণ, রুপা, বিভিন্ন দেশের মুদ্রা পাওয়া গেছে এসব দান সিন্ধুকে। সেগুলো মেঝেতে ঢেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী-শিক্ষক, রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ প্রায় ৪৫০ জন মানুষ টাকা গণনা করছেন।

দিনভর গণনা শেষে শনিবার সন্ধ্যায় টাকার পরিমাণ জানানো হবে বলে জানিয়েছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ।

জনশ্রুতি আছে, প্রায় ২৫০ বছর আগে পাগলবেশী এক আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদ এলাকা হারুয়ায় থামেন। তাকে ঘিরে সেখানে অনেক ভক্ত সমবেত হন। ওই পাগলের মৃত্যুর পর সমাধির পাশে এ মসজিদ গড়ে ওঠে। কালক্রমে এটি পরিচিতি পায় পাগলা মসজিদ নামে।