নাটোর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে হঠাৎ করে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় দেড় শতাধিক রোগী নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, একের পর এক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত থেকে শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাউতলা ও আশপাশের কয়েকটি এলাকায় ডায়রিয়ার উপসর্গ দেখা দেয়। রাতে ৩০ থেকে ৩৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা পর্যন্ত ৬৫ জন এবং বিকাল পর্যন্ত মোট ১৪৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৬ জন পুরুষ, ৫৫ জন নারী ও ২৬ জন শিশু রয়েছে।
এ ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ মুক্তাদির আরেফিন বলেন, ‘‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পানিবাহিত কারণে এ রোগ ছড়িয়েছে।’’ তিনি বলেন, “আমরা আক্রান্ত এলাকায় গিয়ে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করছি। হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুত রয়েছে এবং চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা সেবা দিচ্ছেন।”
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। তিনি রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং চিকিৎসা সেবার খোঁজখবর নেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পৌরসভার সরবরাহকৃত পানি পান করার পর থেকে উপসর্গ দেখা দিয়েছে। হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সুমি খাতুন বলেন, “রোগীর চাপ এত বেশি যে চিকিৎসক-নার্সরা হিমশিম খাচ্ছেন।”
নাটোর পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর উদয় কুমার সরকার বলেন, ‘‘নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এটি পানিবাহিত বলে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগে নমুনা পাঠানো হয়েছে।’’
ওয়াটার সুপারভাইজার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘‘পৌরসভার ১২টি পাম্প থেকে একসঙ্গে পানি সরবরাহ করা হয়। যদি পানিবাহিত সমস্যা হতো তবে পুরো শহর আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ছিল।’’
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, গঠিত মেডিকেল টিম আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করছেন। পরীক্ষার মাধ্যমে ডায়রিয়ার প্রকৃত উৎস শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।