দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার নন্দীপুর ডি এস দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসা চত্বরে বিক্ষোভকালে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, মাদ্রাসা সুপার সরকারি বই চুরি, অ্যাডহক কমিটি গঠনে অনিয়ম, মাদ্রাসার সম্পদ বিক্রি এবং নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত।
স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফুল বলেছেন, “আমাদের গ্রামে মসজিদ ও পাশাপাশি মাদ্রাসা রয়েছে। প্রতিবছর মসজিদের পুকুর থেকে যা আয় হয়, তার অর্ধেক টাকা মাদ্রাসায় দান করা হয়। কিন্তু, এই সুপার আসার পর মসজিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এই মামলায় প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আগে অন্য সুপারের সময় কোনো সমস্যা হয়নি। তাই, আমরা এই সুপারের পদত্যাগ চাই।”
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা আলম হোসেন বলেন, “মাদ্রাসার সুপার স্থানীয়দের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই তার পছন্দমতো দূর থেকে সভাপতি নিয়ে এসে অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছেন। এর জবাব চাই।”
হাসনাত, আরিফুল, ইমরান, আফজালসহ কয়েকজন বলেন, এই সুপারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। তিনি মাদ্রাসার বই চুরি করে বিক্রি করেন, মাদ্রাসার গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন। মাদ্রাসার সাইনবোর্ড টিন দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে, যা গ্রামবাসী সবাই জানে। আমরা এমন দুর্নীতিবাজ সুপার চাই না। তাকে অপসারণ না করলে দেখা যাবে, অচিরেই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অন্যত্র চলে যাবে।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সুপার রায়হান কবির বলেন, “আমি নিয়মমাফিক অ্যাডহক কমিটি করেছি। নারী কেলেঙ্কারি বিষয়ে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।” অন্যান্য অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি।
হাকিমপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুর-আলম বলেছেন, “নন্দীপুর মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উঠেছে, সেগুলো তদন্ত করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেছেন, “নন্দীপুর মাদ্রাসায় অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেছেন, “এ বিষয়ে জেনেছি। খতিয়ে দেখা হবে।”