মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাসুদ রানাকে (৪৩) বরখাস্ত করা হয়েছে। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি জানাজানি হয়।
এর আগে, গত সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. নূরে আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মাসুদ রানার বিরুদ্ধে এমন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর গড়পাড়া ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের আস্থাভাজন আফছার উদ্দিন সরকার পালিয়ে যান। এরপর পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দেওয়ান মাসুদ রানাকে ভারপ্রাপ্ত প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তবে, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের নয়জন সদস্য সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগপত্রে তারা মাসুদ রানার অব্যাহতি চেয়ে নতুন প্যানেল চেয়ারম্যান অথবা প্রশাসক নিয়োগের দাবি করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের জন্য আসবাবপত্র কেনার একটি প্রকল্পে ১৪টি অফিশিয়াল টেবিল, ১৩টি আর্মড ভিজিটর চেয়ার ও ৫০টি প্লাস্টিক চেয়ার কেনার কথা থাকলেও মাসুদ রানা তা না করে বরাদ্দ করা অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
পরিষদে নিম্নমানের ফার্নিচার সরবরাহ করে অটবি ব্র্যান্ডের ভুয়া ভাউচার দাখিল করার অভিযোগ রয়েছে। ট্যাক্স আদায় করা ৫০ হাজার টাকা পরিষদের ব্যাংক হিসাবে জমা না দিয়ে তা আত্মসাৎ করেছেন। চৌকিদার ট্যাক্স থেকে সংগ্রহ করা ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিজের নামে ‘অগ্রিম বেতন’ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
এছাড়া ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রের আয় থেকেও মাসিক ভিত্তিতে অবৈধভাবে অর্থ গ্রহণ, গত ঈদুল ফিতরের আগে ১৫০টি শাড়ি বিতরণের সময় পরিষদের প্রতিটি সদস্যকে ৪টি করে শাড়ি বরাদ্দ দিয়ে বাকি শাড়ি নিজের অনুসারী ও স্বজনদের মধ্যে বিতরণ, উন্নয়ন প্রকল্পের বণ্টনে স্বজনপ্রীতি, অধিকাংশ প্রকল্প নিজের ওয়ার্ডে বরাদ্দ, ৫৮০টি ভিজিএফ কার্ডের মধ্যে ৮০টি কার্ড সদস্যদের দিয়ে ৫০০ ভিজিএফ কার্ড নিজের ইচ্ছামতো বণ্টন করাসহ পরিষদের নতুন প্রকল্পের ১০-১৫ শতাংশ ঘুষ দাবি করার অভিযোগ রয়েছে মাসুদ রানার বিরুদ্ধে।