নেত্রকোনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক এক নেতাকে মারধরের অভিযোগে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি অনিক মাহবুব চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলমের সই করা এক চিঠিতে অনিককে কারণ দর্শাতে বলা হয়। এর আগে, গতকাল বুধবার দুপুরে জেলা এলজিইডি কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
অনিককে পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে, ‘ছাত্রদলের দায়িত্বশীল পদে আসীন থেকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগের ভিত্তিতে আপনার বিরুদ্ধে কেন স্থায়ী সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, এই মর্মে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হলো।’
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ নির্দেশনা দিয়েছেন বলে কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী সারোয়ার জাহান মদন উপজেলার চানগাও গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে এলজিইডির প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছেন।
ভুক্তভোগী ও এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে সারোয়ার জাহান এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে বসে কথা বলছিলেন। সে সময় সুমন নামের এক যুবক সারোয়ার জাহানকে বাইরে নিয়ে যান। বাইরে এলে তাকে কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন ছাত্রদলের সভাপতি অনিক মাহবুব চৌধুরী। একপর্যায়ে ভবনের দোতলা থেকে মারধর করে নিচতলায় নিয়ে আসেন। এ সময় অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও আনসার সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে একটি কক্ষে নিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সারোয়ার জাহান বলেন, “নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলছিলাম। হঠাৎ সুমন নামে একজন বাইরে ডাকেন। বাইরে যেতেই অনিক মাহবুব হামলা চালান। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
এলজিইডি নেত্রকোনা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “সারোয়ার জাহান আমার রুমে বসেছিলেন। সুমন তাকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক পুলিশ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
তবে, মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি অনিক মাহবুব চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘ঠিকাদার সারোয়ার জাহানের সঙ্গে সুমন নামের একজনের কথা-কাটাকাটি হয়। বিষয়টি শুনে আমি এগিয়ে যাই। এখানে আমাকে অহেতুক জড়ানো হচ্ছে।’’
এ বিষয়ে নেত্রকোনা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী শাহ নেওয়াজ বলেন, ‘‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’