সারা বাংলা

পাবনায় বিএনপি নেতার চাঁদাবাজির প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন ব্যবসায়ীরা। 

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে পৌর সদরের বকুলতলায় ভাঙ্গুড়া শিল্প ও বণিক সমিতির আয়োজনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

ব্যবসায়ীরা প্রথমে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বাংলা পৌর সদরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিএনপির একাংশ কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে অংশগ্রহণ করে। পরে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। 

সেখানে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী এ কে এম হানিফ বাবলু অভিযোগ করেন, ‘‘গত ৪ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে ভাঙ্গুড়া বাজারের বকুলতলা মোড়ে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও পাবনা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের ভাঙ্গুড়া উপজেলা শাখার সভাপতি মোতালেব হোসেন এবং তার সহযোগী শাহ শিকদার ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।

‘‘চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং আমার মালিকানাধীন দুটি হাইস মাইক্রোবাসে ভাঙচুর চালানোর হুমকি দেন। শুধু তাই নয়, আমাকে প্রাণনাশের ভয়ও দেখানো হয়।’’ এ ঘটনায় হানিফ ভাঙ্গুড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বলে জানান। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভাঙ্গুড়া শিল্প ও বণিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বর্তমান উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দীন বাহার। তিনি বলেন, “একজন রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় প্রকাশ্যে চাঁদা দাবি ও প্রাণনাশের হুমকি কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

তিনি অভিযুক্ত মোতালেব হোসেন ও তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেপ্তার, রাজনৈতিক পদ থেকে বহিষ্কার, ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তায় বাজার এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার এবং থানায় করা জিডির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। 

সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন ভাঙ্গুড়া শিল্প ও বণিক সমিতির সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম, ব্যবসায়ী হাজী আশরাফ আলী, ভুক্তভোগী এ কে এম হানিফ বাবলু, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুর রহমান লিটন প্রমুখ। ব্যবসায়ীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘দাবিগুলো দ্রুত না মানা হলে তারা বাজার বন্ধসহ কঠোর আন্দোলনে নামবেন।’’ 

অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মোতালেব হোসেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি চিকিৎসার জন্য বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। এ কারণে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। 

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিষয়টি আমি অবগত আছি। ঘটনার সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে বিভিন্ন গ্রুপিংয়ের কারণে এই পরিস্থিতি উদ্ভব হয়েছে। তিনি (মোতালেব) অসুস্থ। মূলত তিনি সাহায্যের জন্য গিয়েছিলেন বলে আমি জানি।’’ 

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “ভাঙ্গুড়ায় ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষ হলে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যবসায়ীদের দাবির বিপরীতে নয়, ভাঙ্গুড়া থানা সর্বদা দেশের নাগরিক ও ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট রয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “থানা পুলিশ বাজার এলাকায় নিয়মিত টহল দিচ্ছে এবং কোনোভাবেই কেউ যেন আইন ভঙ্গ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা।”