সারা বাংলা

মৎস্য অফিসে কর্মরত ছেলে ও আ.লীগ নেতার ইলিশ শিকার

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বরগুনার তালতলী উপজেলা মৎস্য অফিসের মাঠ সহায়ক আবুল কাসেম রিঙ্কু ও তার বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক জলিল ফকিরের বিরুদ্ধে সমুদ্রে ইলিশ মাছ শিকারের অভিযোগ উঠেছে।

সমুদ্র থেকে শিকার করা বেশ কয়েক মণ ইলিশ মাছ রিঙ্কুর নেতৃত্বে সরিয়ে নেওয়ার সময় স্থানীয় বাসিন্দারা আটক করে। ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য মা ইলিশ রক্ষায় গত ৪ অক্টোরব থেকে দেশের নদী-সমুদ্রে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। এ সময়ে ইলিশ ধরা, পরিবহন, কেনাবেচা বন্ধ থাকবে।   

রবিবার (৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশগুলো আটক করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তালতলী উপজেলার সোনাকাটা গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাসেম রিঙ্কু ও তার বাবা জলিল ফকিরের দুটি ট্রলার সরকারি নির্শেনা অমান্য করে নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগের দিন শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে সমুদ্রে যায়।

স্থানীয় জেলেরা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতা জলিল ফকির ও তার ছেলে রিঙ্কু সাগরে ইলিশ মাছ শিকার করেছেন।  

রবিবার (৫ অক্টোবর) গভীর রাতে ইলিশ মাছ নিয়ে ওই ট্রলার দুটি ফকিরহাট ঘাটে আসে। পরে ট্রলারের লোকজন ইলিশ মাছ ড্রামে ও বস্তায় ভরে রিঙ্কুর মৎস্য আড়তে রাখে। স্থানীয় জেলে আমির হোসেন ও রুবেল আড়তে বস্তায় ভরে রাখা ইলিশ আটক করে। তখন তারা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাড়া পাননি। রাতে আড়ত থেকে ম্যানেজার আল আমিন, জলিল ফকির ও রিঙ্কু মাছ সরিয়ে ফেলে।

জেলে আমির হোসেন ও রুবেল বলেন, ‘‘ট্রলারের শব্দ পেয়ে মৎস্য ঘাটে এসে দেখি রিঙ্কু ও তার বাবার দুটি ট্রলারে অনেক ইলিশ মাছ। ট্রলারের জেলেরা ওই মাছ বস্তা ও ড্রামে ভরে রিঙ্কুর আড়তে নেয়। আমরা এর প্রতিবাদ করি। ওই মাছ রাতে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়।’’

রিঙ্কুর আড়তের ম্যানেজার আল আমিন বলেন, ‘‘এই মাছ অনেক আগের। রাতে আড়ৎ থেকে মাছ সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’’

অভিযোগের বিষয়ে রিঙ্কু বলেন, ‘‘আমার বাবার ইলিশ মাছের ব্যবসা আছে। রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করতে আমাকে জড়ানো হয়েছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।’’

তালতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন বলেন, ‘‘আমি নদীতে টহলে ছিলাম। সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে শুনেছি, আমার অফিসের মাঠ সহায়ক আবু কাসেম রিঙ্কু ও তার বাবার দুটি ট্রলার সাগর থেকে ইলিশ মাছ শিকার করে ঘাটে এসেছে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমার অফিসের কেউ অনিয়ম করলে আমি এর দায়ভার নেব না। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘‘বিষয়টি আমি জেনেছি। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’