সারা বাংলা

৩৫ ফুট নিচে ক্যামেরা পাঠিয়েও দেখা যায়নি সাজিদকে

রাজশাহীর তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে গভীর নলকূপ বসাতে খনন করা গর্তে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদকে (২) দেখতে কয়েকদফা ক্যামেরা নামিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ৩৫ ফুট পরে ক্যামেরায় আর কিছু দেখা যায়নি। উদ্ধারকারীরা শিশুটিকেও দেখতে পাননি।

তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়ন উচ্চ খরাপ্রবণ এলাকা। এখানে মাটির ১২০ থেকে ১৩০ ফুট গভীরেও ভূ-গর্ভস্থ পানির সন্ধান মেলে না। এ জমির মালিক কছির উদ্দিন একটি গভীর নলকূপ বসাতে চেয়েছিলেন। তাই বছর খানেক আগে ৮ ফুট ব্যাসার্ধে গর্ত খনন করেছিলেন। পানি না পেয়ে গভীর নলকূপ বসানো হয়নি। সেই গর্তে পড়ে যায় গ্রামের রাকিবুল ইসলামের দুই বছর বয়সী ছেলে সাজিদ।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরের এ ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট উদ্ধার কাজ শুরু করে। ক্যামেরা নামিয়ে তারা শিশুটিকে দেখতে পায়নি। বিকেল থেকে ওই সরু গর্তের পাশে স্কেভেটর দিয়ে খনন শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস। রাত ১টা পর্যন্ত প্রায় ২৫ ফুট খনন করা সম্ভব হয়েছে। এভাবে মাটি খুড়েই শিশুটির কাছে পৌঁছাতে চান উদ্ধার কর্মীরা।

গতকাল দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ উৎকণ্ঠা নিয়ে উদ্ধার তৎপরতা দেখছেন। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এ পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থলে যান তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খান। উদ্ধার কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী স্টেশনের সহকারী পরিচালক দিদারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‍“আমরা ৩৫ ফুট পর্যন্ত গভীরে ক্যামেরা পাঠিয়ে ভিকটিমকে দেখতে পাইনি। আমরা ভিকটিমকে অক্ষতভাবে উদ্ধার করতে চাই। ভিকটিম বেঁচে আছে কি না সেটাও আমরা জানি না। তাকে অক্ষতভাবে উদ্ধার করতে পাশে মাটি খনন করা হচ্ছে।”

ইউএনও নাঈমা খান বলেন, “ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কাজ করছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আছে। উদ্ধার কাজ চলমান আছে। আল্লাহ যেন শিশুটিকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়।”

শিশু সাজিদের মা রুনা খাতুন জানান, তাঁর তিন ছেলে। দুই বছরের সাজিদ মেজ। তাদের একটি ট্রলি দেবে গেলে ছোট ছেলে সাদমানকে কোলে নিয়ে আর সাজিদের হাত ধরে তিনি বাড়ির পাশের ওই মাঠে আসেন। ফেরার সময় সাজিদ গর্তে পড়ে যায়।

রুনা বলেন, “আমি সামনে হাঁটছি, সাজিদ পেছনে। একটু পর পেছনে ঘুরে দেখি, সাজিদ নাই। শুধু মা মা ডাক শুনছি।”

সাজিদের মা জানান, গর্তের মুখে খড় ছিল। তাই গর্ত বোঝা যায়নি।