সারা বাংলা

বরগুনায় প্রচার চালিয়ে মহাবিপন্ন প্রজাতির বাঘা আইর বিক্রি

ফেসবুকে প্রচার করে ঢাকঢোল পিটিয়ে বিক্রয় নিষিদ্ধ মহাবিপন্ন ও বিরল প্রজাতির একটি বাঘা আইর মাছ কেটে রান্না করে বিক্রি করা হয়েছে। মাছটির ওজন ছিল ৭০ কেজি।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বরগুনা পৌরশহরে জেলা বিএনপির অফিস সংলগ্ন এলাকায় মজিবর হোটেলে মাছটি রান্না করে বিক্রি করা হয়। 

এর আগে সকাল ১০টার দিকে ভোজনরসিকদের আকৃষ্ট করতে হোটেলের সামনে বিরল প্রজাতির মাছটিকে প্রদর্শন করে হোটেল মালিক মজিবর। এসময় স্থানীয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের ডেকে তাদের মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচারণাও চালান হোটেল মালিক। 

হোটেল মালিক মজিবর জানান, মাছটি ৮২ হাজার টাকায় ঢাকার তেজগাঁও বাজার থেকে বরগুনার স্থানীয় আড়তদার মোস্তফার মাধ্যমে ক্রয় করেন তিনি। 

হোটেল ব্যবসায়ী মজিবর বলেন, “শখের বশে আমি এই মাছটি এনেছিলাম। এর আগে হোটেলে বড় বড় মাছ বিক্রি করেছি। তবে বাঘা আইর মাছ এবারই প্রথম। অনেকে ফোন করে নিশ্চিত করেন দুপুরে এবং রাতে তারা আমার হোটেলে এসে বাঘা আইর মাছটি খেতে চান।

এদিকে, বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় ঢাকঢোল পিটিয়ে নিষিদ্ধ বাঘা আইর মাছ বিক্রি করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন পরিবেশ প্রেমীরা। 

উপকূলের প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা পরিবেশ প্রেমী আরিফ রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, “বাঘা আইর মাছ শিকার ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, এটি মহাবিপন্ন একটি জলজ প্রাণি। তাই এই মাছ শিকার করে হোটেলে রান্না করা বা বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ এবং বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ অনুযায়ী এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন কিংবা বন বিভাগ।”

এ বিষয়ে জানতে বরগুনা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামানকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। 

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বরগুনা ও পটুয়াখালীর দায়িত্বে থাকা সহকারী বন রক্ষক তারিকুল ইসলাম এবং বরিশাল বিভাগের উপ বন সংরক্ষক ড. মো. জাহিদুর রহমান মিয়ার সরকারি মুঠোফোনে কলা করা হয়। তবে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 

বরগুনা সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সিফাত বিন সাদেক রাইজিংবিডিকে বলেন, “ঘটনা সম্পর্কে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি, সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”