চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ এবং তার স্ত্রী তামান্না শারমীনের সাতটি মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) চেম্বার জজ রেজাউল হকের আদালত এ আদেশ দেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক রুশদ হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, উচ্চ আদালত পৃথক সাতটি মামলায় সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীকে জামিন দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর চেম্বার আদালত সেই জামিন স্থগিত করেন।
শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদের বিরুদ্ধে দশটি হত্যাসহ মোট ১৯টি মামলা আছে। সর্বশেষ গত ১৫ ডিসেম্বর আরো দুটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন আদালত।
আগে ১৩ ডিসেম্বর চান্দগাঁও থানা পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। মামলাগুলো জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। একটি রাজমিস্ত্রি ফজলে রাব্বী হত্যা মামলা। অন্যটি পুরাতন চান্দগাঁও থানার সামনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা। এ নিয়ে সন্ত্রাসী সাজ্জাদ মোট ২১টি মামলার আসামি। এগুলোর মধ্যে ১২টি হত্যা মামলা।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের মোস্ট ওয়ান্টেড ছোট সাজ্জাদকে ২০২৫ সালের ১৫ মার্চ রাজধানীর একটি অভিজাত শপিং মল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তার অপরাধ নেটওয়ার্কের নিয়ন্ত্রণ নেন স্ত্রী তামান্না শারমীন। পরে পুলিশ তামান্নাকেও গ্রেপ্তার করে।
চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশের কাছে থাকা রেকর্ড অনুযায়ী, সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারের প্রতিশোধ নিতে ২৯ মার্চ রাতে নগরীর বাকলিয়া এক্সেস রোডে জোড়া খুনসহ অন্তত তিনটি হত্যাকাণ্ড ঘটে। একই সময়ে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে হানিট্র্যাপে ফেলে গুলি করে হত্যা করা হয় আরেক সন্ত্রাসী ঢাকাইয়্যা আকবরকে।
সর্বশেষ গত ৫ নভেম্বর নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্ল্যাহ বায়েজিদ এলাকায় গণসংযোগ চালানোর সময় সেখানে উপস্থিত সন্ত্রাসী সরোয়ার বাবলাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনাতেও সাজ্জাদের নাম উঠে আসে। এছাড়া, রাউজানে অন্তত সাতজন ছাত্রদল ও যুবদলকর্মী হত্যাকাণ্ডে সাজ্জাদ ও তার সহযোগীদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সম্প্রতি হাইকোর্টে সাজ্জাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সাতটি মামলার জামিন হলে বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। সর্বশেষ চেম্বার আদালত সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীর সাত মামলার জামিন স্থগিত করেন বুধবার।