সাতক্ষীরার ভোমরা শুল্ক স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ কাস্টমস হাউস হিসেবে ঘোষণা করে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করলেও এখনো কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এতে একদিকে যেমন বন্দরের কার্যক্রমের পরিধি বাড়ছে না, তেমনি সকল কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারী এবং বন্দরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলেন, চাল আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং আমদানি পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা কমে যাওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শত শত বন্দর শ্রমিক।
ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৯৬ সালে ভোমরা শুল্ক স্টেশনের যাত্রা শুরু হয়। বন্দরটি দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার ছিল। অবশেষে গত ১৪ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জারির মধ্য দিয়ে ভোমরা শুল্ক স্টেশনকে ‘কাস্টমস হাউস’ হিসেবে উন্নীত করা হয় এবং কমিশনারসহ নতুন কর্মকর্তার পদ সৃষ্টি করা হয়। তবে প্রজ্ঞাপন জারির দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো নিয়োগ হয়নি।
এদিকে চাল আমদানি বন্ধ হওয়ার পর থেকে ভোমরা বন্দরে পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। আগে যেখানে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাক পণ্য নিয়ে প্রবেশ করত, বর্তমানে তা ১৫০-এ দাঁড়িয়েছে। কাজ না থাকায় দিনমজুর শ্রমিক ও কর্মচারীরা বিপাকে পড়েছেন।
আমদানিকারক ও শ্রমিকদের দাবি, দ্রুত কমিশনার নিয়োগ করে বন্দরের কার্যক্রম পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হবে। কমিশনার নিয়োগ হলে সব ধরনের পণ্য আমদানি করার সুযোগ তৈরি হবে। এতে কাজের পরিধি বাড়ার পাশাপাশি শ্রমিকদের অর্থকষ্টও দূর হবে।
ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবু হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. আবু মুছা বলেন, “অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন যখন জারি হয়েছে, তখন আশা করছি দ্রুতই কমিশনার নিয়োগ হবে। কমিশনার নিয়োগের সঙ্গে সঙ্গে সব ধরনের পণ্য আমদানি শুরু হলে বর্তমান সংকট কেটে যাবে।”
তারা আরো জানান, ভোমরা দেশের অন্যতম ব্যস্ততম স্থলবন্দর। প্রতিদিন এ বন্দরের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য পরিচালিত হয়। কাস্টম হাউজে উন্নীত হওয়ার ফলে প্রশাসনিক সক্ষমতা, জনবল বৃদ্ধি ও অবকাঠামো উন্নয়ন হবে, যা ছিল ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা।
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের কর্মকর্তা (এডি) আতিকুল ইসলাম বলেন, “সরকার কাস্টমস হাউস ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষ আধুনিক ওয়্যারহাউস, ওপেন ইয়ার্ড, বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ান ট্রাক টার্মিনালসহ অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ হাতে নিয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল কাজ শেষে হলেই ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পুরণ হবে।”