হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে বরিশালে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ‘ইনকিলাব মঞ্চ’র মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রহমতপুর বাস স্ট্যান্ডে মহাসড়ক অবরোধ করে বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি সবুজ আকনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
অবরোধ চলাকালে সড়কের উভয় পাশে ২ শতাধিকের বেশি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে যাত্রীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে। কর্মসূচি উপলক্ষ্যে সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হন।
পরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। প্রায় ২ ঘন্টা ব্যাপি রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বরিশালে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভ কালে ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা।
বক্তারা বলেন, হাদি বিল্পপী নেতা ছিল। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে প্রকাশ্যে গুলি করা হয় এবং পরবর্তীতে বিদেশে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
ছাত্রনেতা সবুজ আকন বলেন, “হাদিকে ভারতের আগ্রাসীর কারণে হত্যা করা হয়েছে। হাদির হত্যার দায় প্রশাসন ও শেখ হাসিনার নিতে হবে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ রাষ্ট্র পরিণত করতে চায়। হাদি ভারতের আগ্রাসী ভুমিকার প্রতিবাদ করায় তাকে হত্যা করা হয়। হাদির হত্যার সাথে জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। ওসমান হাদি যেহেতু বরিশালের সন্তান, সেহেতু বরিশাল বিমান বন্দর শহীদ ওসমান হাদি নামে করার দাবি জানাই।”
বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা স্লোগানের মুখরিত রাজপথ, বরিশাল বিমান বন্দর হাদির নামে নামকরণ করতে হবে, ‘তারেক রহমানের বাংলায় জঙ্গিবাদ এর ঠাঁই না‘, ‘তুমি কে আমি কে হাদি হাদি’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘খুনিদের ফাঁসি দাও, দড়ি লাগলে দড়ি নাও’, ‘গোলামি না শাহাদাত, শাহাদাত শাহাদাত’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘সন্ত্রাসীদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘বিমান বন্দর হাদি হাদি’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সমাবেশে বরিশাল জেলা ছাত্রনেতা সবুজ বলেন, “আগামী ২৪ ঘন্টার ভিতরে শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।” অন্যথায় এ আন্দোলন আরো কঠোর কর্মসূচিতে রূপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
গত ১৭ বছরের স্বৈরাচার সরকার খুনি শেখ হাসিনা গুম, হত্যার সাথে জড়িত নেতা কর্মীদের সাথে মিলে একটা দল দেশের অরাজগতা সৃষ্টি করেছে। দ্রুত শেখ হাসিনাসহ হাদি ভাইয়ের হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ভবিষ্যতে যেন হাদি ভাইয়ের মতো আর কেউ হত্যার শিকার না হয়, সে জন্য জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, বলেও জানান তিনি।