উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। কমে এসেছে দিনের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ব্যবধানও। রোদের দেখা মিলছে অনেক দেরিতে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। ভোর থেকে ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
এদিন, সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। সেদিনও সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা বিরাজ করে। দুপুরের দিকে সূর্যের দেখা মিললেও ঠান্ডার অনুভূতি ছিল। সোমবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ, দিনের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ব্যবধান ছিল মাত্র ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। সকালে অনেকেই কাজে যেতে বিপাকে পড়েন। শীত নিবারণের জন্য বিভিন্ন স্থানে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে ছিন্নমূল মানুষদের।
হাড়িভাসা এলাকার অটোরিকশাচালক আবু বক্কর বলেন, “কুয়াশার কারণে সকালে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হয়েছে। এরপরও সামনে ঠিকমতো দেখা যাচ্ছিল না। ঠান্ডার কারণে যাত্রীও কম।”
দিনমজুর ওমর আলী বলেন, “সকালে ঠান্ডার জন্য কাজ করতে খুব কষ্ট হয়। কাজ না করলে খাব কী?”
মোটরসাইকেল চালক হাসিবুল ইসলাম বলেন, “জরুরি কাজে সকালে বাসা থেকে বের হই। প্রচণ্ড ঠান্ডায় মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছিল।”
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি শীত মৌসুমে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় গত ১১ ডিসেম্বর। সেদিন তাপমাত্রা নেমে যায় ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা এ মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, “বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা দেখা যায়। ডিসেম্বরের শেষ দিকে তেঁতুলিয়াসহ উত্তরাঞ্চলের ওপর মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”