দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম নৌপথ এখন ঘন কুয়াশায় খুব ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষ করে চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মোহনপুর হতে হাইমচরের নীলকমল এলাকা, রাতে যাত্রীদের নির্বিগ্নে চলাচলে ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) এসব বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুরের উপ-পরিচালক বাবু লাল বৌদ্য বলেন, “আমরা নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে বাল্কহেড গুলোকে রাতে চলাচলে আইনের কঠোরতা প্রয়োগ করছি। তাছাড়া লঞ্চের ফগ লাইট ও সাইড লাইট নিশ্চিত করা, লঞ্চের ফিটনেস ও লাইসেন্স তদারকিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরো বেশি দায়িত্বশীল হতে কাজ করছি।”
যাত্রীরা বলছেন, আমরা আরামদায়ক যাত্রা হিসেবেই নৌপথে লঞ্চ যাত্রা বেছে নেই। কিন্তু, চালকদের অদক্ষতা ও অসতর্কতার জন্যই আমাদের জীবন থাকছে ঝুঁকিতে। তাই ঝুঁকি এড়াতে এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া এখন সময়ের দাবী।
এর আগে গেলো বেশ কয়দিনই পদ্মা-মেঘনার চাঁদপুর অঞ্চল পারি দিতে গিয়ে প্রায়ই নৌ দুর্ঘটনার খবরা-খবর পাওয়া যাচ্ছে। সবশেষ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে মতলব উত্তরের মেঘনা নদীর মোহনপুর এলাকায় নদীতে নোঙর করে রাখা একটি বালুবাহী বাল্কহেডের সঙ্গে ইমাম হাসান-৫ লঞ্চের সংঘর্ষ হয়। লঞ্চটিতে প্রায় সহস্রাধিক যাত্রী থাকলেও এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। একই দিন দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মেঘনার নীলকমল এলাকায় জাকির সম্রাট-৩ ও অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ৪ যাত্রী নিহত এবং ৫ জন আহত হন।
নিহতরা হলেন ভোলা জেলার লালমোহন থানার সিরাজুল ব্যাপারীর ছেলে আব্দুল গণি (৩৮), একই এলাকার মো. কালুর ছেলে মো. সাজু (৪৫), মিলন মিয়ার স্ত্রী ও মোক্তার হোসেনের মেয়ে রিনা (৩৫) এবং চরফ্যাশন থানার আমির হোসেনের ছেলে মো. হানিফ (৬০)। এদের প্রত্যেকের পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে দেড় লাখ টাকা ও আহতদের চিকিৎসায় ৫০ হাজার টাকা সহায়তা হিসেবে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
উপদেষ্টা বলেন, “অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের ৫ স্টাফকে এরই মধ্যে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাই ঘন কুয়াশার মধ্যে নৌপথে লঞ্চ না চালানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।”