সারা বাংলা

১০ হাজার টাকার চুক্তিতে নির্বাচন অফিসে আগুন: পুলিশ সুপার

লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আবু তারেক জানিয়েছেন, লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগানোর ঘটনায় রুবেল নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত একেএম শাহজাহান কামালের এপিএস পরিচয়দানকারী শিমুল চক্রবর্তী ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাকে দিয়ে এ ঘটনা ঘটান।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে পুলিশ সুপার তার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিং করে এ তথ্য জানান। এর আগে, গত ১২ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন অফিসে আগুন দেয় মুখোশ পরা এক যুবক। এ ঘটনায় ১৩ ডিসেম্বর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারুক হোসাইন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার পরপরই অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। একপর্যায়ে রুবেলকে শনাক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার দক্ষিণ মজুপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রুবেল দক্ষিণ মজুপুর এলাকার মৃত আবুল হাশেমের ছেলে ও সদর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হাকিমের ভাই। তিনি বিদ্যুৎ অফিসের সাবেক গাড়িচালক। তার ভাই আজিজ ছাত্রলীগ করায় তিন মাস আগে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। চাকরিকালীন সময়েই সাবেক মন্ত্রীর এপিএস শিমুলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্যে এসপি জানান, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তফসিল ঘোষণার পর জনগণের মাঝে আতঙ্ক তৈরি ও নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে সাবেক মন্ত্রীর এপিএস শিমুল ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে রুবেলকে আগুন লাগানোর প্রস্তাব দেন। এতে রুবেল রাজি হন। ১১ ডিসেম্বর বিকেলে নির্বাচন কার্যালয়ে যান তিনি। ওই দিন সন্ধ্যায় শিমুল তার বিকাশে দুই হাজার টাকা পাঠান। পরে স্টেডিয়ামের সামনের একটি দোকান থেকে এক লিটার পেট্রোল নেন রুবেল। একপর্যায়ে গভীর রাতে মাস্ক পরে নির্বাচন কার্যালয়ে ঢুকে নিচতলার উত্তর পাশে স্টোররুমের জানালা খোলা পেয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেন।

এসপি আবু তারেক আরো জানান, রুবেলের মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তার মোবাইল থেকে ঘটনার সময় তোলা আগুন ধরানোর স্থিরচিত্র পাওয়া গেছে। তার মোবাইল কথোপকথন পর্যালোচনা ও জিজ্ঞাসাবাদে জেলা খাদ্য গুদাম ও এলজিইডি অফিসে আগুন লাগানোর পরিকল্পনার বিষয়টিও জানা যায়। যে দুটি বিকাশ নম্বর থেকে তাকে টাকা পাঠানো হয়েছে তাদেরও শনাক্ত করা হয়েছে। নির্দেশদাতা ও অন্যান্য সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।