ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় উন্মুল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসায় বিস্ফোরণে উড়ে গেছে একতলা ভবনের কক্ষ।
এই ঘটনায় অন্তত চারজন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ককটেল, কেমিক্যাল জাতীয় দ্রব্য ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) আনুমানিক ১১টার দিকে এ বিস্ফোরণ ঘটে। খবর পেয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে বিস্ফোরণের সুনির্দিষ্ট কারণ তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভবনের ভেতরে থাকা বিস্ফোরকজাতীয় কেমিক্যাল থেকে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিষয়টি তদন্তে র্যাব ও সিআইডির বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে জানানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজি চালক জাকির হোসেন জানান, হঠাৎ বিকট শব্দের সঙ্গে একটি ইটের মতো বস্তু তার মাথায় আঘাত করে। এতে তার মাথা ফেটে যায় এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। পরে তাকে আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বাড়ির মালিক পারভীন বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তার শ্যালক আলামিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন এবং তিনি মাঝেমধ্যে আসতেন। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, বুঝতে পারিনি। পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।
বিস্ফোরণে মাদ্রাসা ভবনের আসবাবপত্র, জানালার কাচ ভেঙে যায় এবং দেয়ালের একটি অংশ উড়ে যায়। আশপাশে কাচ ও দেয়ালের টুকরা ছড়িয়ে পড়ে। পাশের মোহাম্মদ হোসেনের মালিকানাধীন ভবনটিও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষক আলামিনের দুই ছেলে উমায়েদ (১০) ও আবদুল্লাহ (৮), মেয়ে রাবেয়া (৬) এবং পাশের একটি সিএনজি গ্যারেজের শ্রমিক জাকির হোসেন (৪৫) আহত হয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, মাদ্রাসাটিতে ৩৫ জনের মতো শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল আলম বলেন, প্রথমে গ্যাস বিস্ফোরণের কথা শোনা গেলেও ঘটনাস্থল পরিদর্শনে দেখা গেছে গ্যাস সিলিন্ডার অক্ষত রয়েছে। এটি গ্যাস বিস্ফোরণ নয়। ঘটনাস্থলে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করেছে। সেখান থেকে ককটেল, দাহ্য পদার্থ ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।