সারা বাংলা

শীতে কাবু ফরিদপুর, খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা খুঁজছে মানুষ

টানা ছয় দিন ধরে তাপমাত্রা কমতে থাকায় ফরিদপুরে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। চার দিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। কনকনে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে জেলার বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে চরাঞ্চলের মানুষরা খড়কুটো ও গাছের পাতা জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে বাধ্য হচ্ছেন।

বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে চরভদ্রাসন উপজেলার চর সুলতানপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের পাশে দেখা যায়, একদল শিশু জড়ো হয়ে আগুন পোহাচ্ছে। আশপাশ থেকে কুড়িয়ে আনা গাছের শুকনো পাতা, ডালপালা আর কাগজ পুড়িয়ে একটু উষ্ণতা খোঁজার চেষ্টা করছেন তারা।

সেখানে থাকা ৭ বছর বয়সী শিশু রাতুল ইসলাম জানায় তার কষ্টের কথা। সে বলে, “অনেক ঠান্ডা। অনেক দিন ধরে সূর্যের আলো দেখা যায় না। আগুন জ্বালিয়ে সবাই গোল হয়ে বসে তাপ নিচ্ছি।”

রাতুলের মতো অনেক শিশুর এখন সকাল কাটে আগুনের কুণ্ডলীকে ঘিরে। কারণ, টানা কয়েকদিনের কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় স্বাভাবিক চলাফেরা দুঃসহ হয়ে পড়েছে।

ফরিদপুর আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৮ শতাংশ। গত সোমবার তাপমাত্রা ছিল ১৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার ছিল ১২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ ধারাবাহিকভাবে তাপমাত্রা কমছে, যা শীতের তীব্রতাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে বহুগুণ।

তীব্র শীতের প্রভাব পড়েছে কৃষি ও শ্রমজীবী মানুষের ওপর। সদরপুরের সবজিচাষি আক্কাস মাতুব্বর বলেন, “মাঠে কাজ করতে গেলে মনে হয়, বরফের বাতাস গায়ে লাগছে।” 

ভ্যানচালক ইসাক মোল্লা বলেন, “রাস্তায় মানুষ না থাকায় আয় কমে গেছে। তবু, পেটের দায়ে মোটা কাপড় পরে রাস্তায় নামতে হচ্ছে।”

জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল হক জানিয়েছেন, ফরিদপুরে আজ বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরের বাতাস ও মেঘলা আকাশের কারণে কুয়াশা বেড়েছে এবং সূর্যের দেখা মিলছে না। আরো ২-৩ দিন এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে। আকাশ পরিষ্কার হলে দিনের তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা আছে।