বিপিএল ২০১৯

সন্তোষজনক স্থানীয় ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্স, বোলাররা নির্বিষ

বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের আট ম্যাচ মাঠে গড়িয়েছে। শেষ হয়েছে ঢাকা পর্বের প্রথম রাউন্ড।

পয়েন্ট টেবিলে শক্ত অবস্থানে আছে রাজশাহী রয়্যালস। দুই ম্যাচের দুটিতেই জয় পেয়েছে তারা। এছাড়া খুলনা টাইগার্স এক ম্যাচেই পেয়েছে জয়ের স্বাদ। এ দুই দল বাদে বাকি পাঁচ দলই পেয়েছে পরাজয়ের স্বাদ।

রংপুর রেঞ্জার্স ও সিলেট থান্ডার এখনও জয়ের মুখ দেখেনি। সিলেট তিন ম্যাচের হেরেছে তিনটিতে। মোহাম্মদ নবীর রংপুর রেঞ্জার্স দুই ম্যাচে পায়নি কোনো জয়। কুমিল্লা জয় দিয়ে মিশন শুরু করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে হেরেছে ঢাকা প্লাটুনের কাছে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পেলেও হেরেছিল দ্বিতীয় ম্যাচে। তৃতীয় ম্যাচে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ দলে ফিরে দলকে আবার দিয়েছেন জয়ের স্বাদ।

মাশরাফির ঢাকা নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরেছিল। ঘুরে দাঁড়াতে সময় নেয়নি তারা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে জয় তুলে বন্দরনগরীর মিশন শুরু করতে যাচ্ছে তারা। বলার অপেক্ষা রাখে না ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের প্রভাব পড়েছে দলগত পারফরম্যান্সের। আছে কিছু ব্যক্তিক্রমও।

বিপিএলের শুরুটা হয়েছিল মোহাম্মদ মিথুনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে। সিলেটের ব্যাটসম্যান ৪৮ বলে ৮৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু তার ইনিংসটি আড়ালে চলে যায় ইমরুলের ব্যাটে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ইমরুল ৩৮ বলে ৬১ রান করে দলকে এনে দেন কাঙ্খিত জয়। মিথুনের ক্যামিও সেদিন কাজে আসেনি। পরের দুই ম্যাচে মিথুনের ব্যাট কথা বলেনি। দুই ইনিংসে করেছেন মাত্র ২৮।

তবে ইমরুল ফর্মে থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন। প্রথম ম্যাচের পর তৃতীয় ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৪৪ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় ম্যাচে করেছিলেন ১২। বিপিএলে এখন পর্যন্ত ১১৭ রান করে সবার উপরে আছেন ইমরুল। যদিও সমান রান তারই সতীর্থ চার্দিক ওয়ালটনের। ক্যারিবীয়ান ক্রিকেটারও ৩ ম্যাচে করেছেন ১১৭ রান।

ব্যাট হাতে রানে আছেন লিটন কুমার দাস। যদিও তার ইনিংসগুলো বড় হয়নি এখনও। দুই ইনিংসের একটিতে করেছেন অপরাজিত ৪৪ ও আরেকটিতে ৩৯। সৌম্য বরাবরের মতো শুরুটা করেন দুর্দান্ত। হতাশ করেন বাজে শট খেলে। দুই ইনিংসে ভালো শুরুর পর আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত করেছেন ২৬ ও ৩৫ রান। দ্যুতি ছড়িয়েছেন জাতীয় দলের ওপেনার নাঈম শেখ। দুই ইনিংসের একটিতে করেছেন ৭৮, আরেকটিতে ১৭।

মোসাদ্দেক প্রথম ম্যাচে ২৯. শেষ ম্যাচে অপরাজিত ৬০। দ্বিতীয় ম্যাচে ২০। সিনিয়রদের মধ্যে তামিম ইকবালের শুরুটা ভালো ছিল না। তবে ড্যাশিং ওপেনার সময় নেননি ছন্দে ফিরতে। প্রথম ম্যাচে ৫ রানে আউট হওয়ার পর পরের দুই ইনিংসে তার রান ৭৪ ও ৩১। মুশফিক এক ম্যাচে করেছেন ২৮। মাহমুদউল্লাহ ফেরার ম্যাচে করেছেন ১৫ রান।

স্থানীয় ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্স সন্তোষজনক হলেও বোলাররা নির্বিষ। পেসার আল-আমিন বাদে বলার মতো পারফরম্যান্স নেই কারো। রুবেল হোসেন উইকেট পেলেও মিতব্যয়ী বোলিংয়ে ব্যর্থ। ৩ ম্যাচে ৩ উইকেট পেতে রান দিয়েছেন ৩০। ইকোনমি রেট ৮.১৮। মুস্তাফিজুর রহমান নিজের প্রথম ম্যাচের শেষ ওভারে ব্যয় করেন ২৬ রান। দ্বিতীয় ম্যাচেও পারেননি স্বরূপে ফিরতে। তাসকিন আহমেদের গত বিপিএল ভালো কেটেছিল। এ বছর এখনও নিজের উপস্থিতি দেখাতে পারেননি। শফিউল আপ টু মার্ক নেই।

ব্যাটিংয়ে স্থানীয়দের দাপটের সময়ে বোলিংয়ে শীর্ষে বিদেশি ক্রিকেটার থিসারা পেরেরা। ৪ ম্যাচে ডানহাতি পেসার পেয়েছেন ৫ উইকেট। এদিকে জাতীয় দলের বাইরে থাকা কেউই ভালো করতে পারেননি। প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি রনি তালুকদার। তিন ম্যাচে করেছেন, ৫, ১৯ ও ১৪ রান। নাসির হোসেন প্রথম ম্যাচে ডাকের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে করেছেন ২৪ ও ৩। দ্যুতি ছড়াতে ব্যর্থ জুনায়েদ, সোহাগ গাজী, ইয়াসির আলী,সাব্বির রহমানরা।

বোলিংয়ে এখনও নিজের উপস্থিতি দিতে ব্যর্থ ইবাদত হোসেন, ফরহাদ রেজা, সানজামুল ও আবু জায়েদরা। অফফর্মে থাকা ক্রিকেটারদের চট্টগ্রামে ভাগ্য ফেরে কিনা সেটাই দেখার। যারা ধারাবাহিকতায় আছেন তাদের জন্য লড়াইটা আরও কঠিনই হবে। ঢাকা/ইয়াসিন